পাটুরিয়া ফেরিঘাট থেকে: যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের পর ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদেরর মরদেহ নেওয়া হবে ফরিদপুরের নিজ গ্রামে। ঢাকায় যখন ফাঁসির তোড়জোড় চলছে তখন ফরিদপুরে যাওয়ার পথও পরিষ্কার করে রাখা হয়েছে।
নির্বিঘ্নে সেখানে পৌঁছাতে ফাঁকা করে রাখা হয়েছে পাটুরিয়া দৌলুদিয়া ফরিঘাট। ২৪ ঘণ্টা জমজমাট ফেরিঘাটিতে যানচলাচল থাকলেও তা যেমন সীমিত তেমনি এক ধরনের সুনসান নিরবতাও ভর করেছে সেখানে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশের পাহারাও চোখে পড়ার মত।
এসব দেখে কাবেরি ফেরির একজন স্টাফ বললেন, অন্যদিন গাড়িগুলো সিরিয়ালে আনতেই কত সময় কেটে যায়, আর আজ যেন চট জলদি গাড়িগুলো পার হয়ে যাচ্ছে। লক্ষ্য করা গেল, ফেরিগুলোতে হকারের হাকডাকও নেই।
সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন মিডিয়াম গোছের ফেরিটির আরো কয়েকজন স্টাফের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বিকেল থেকেই অতিরিক্ত লোকের চাপ নেই। আর পুলিশের পাহারাও বেড়েছে।
নিজের ধারণা থেকে তিনি আরো বললেন, রেডিও টেলিভিশনের খবর আর পুলিশের পাহারা জোরদার দেখে মনে হল, আজই কাজ (ফাঁসি) হয়ে যাবে। একজনের বাড়ি যেহেতু ফরিদপুর, মরদেহ এ পথেই আনবো।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কিংবা ঢাকার দিকে যাওয়া বাসের যাত্রীদেরও ফাঁসির বিষয়টি নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। কেউ টেলিফোনে বাড়িতে টিভির সামনে থাকা স্বজনের কাছে খোঁজ নিচ্ছেন, কেউ কেউ অনলাইনে পত্রিকা পড়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
পরে ফাঁসি কেন্দ্রীক আলোচনায় যোগ দিচ্ছেন। তবে সবার চোখেই পড়েছে ফেরিঘাট আর মহাসড়কে আজকের বাড়ি নিরাপত্তা।
সাতক্ষীরাগামী সংগ্রাম বাসের যাত্রী, শেখ আহসান বাংলানিউজকে বলেন, তিনদিন আগেই এই ফেরিঘাট দিয়ে ঢাকায় গিয়েছি। তখনো হকারদোর ডাক, ঘাটের রাস্তার দু’পাশে থাকার দোকানগুলোর জমজমাট বেচাকেনা দেখে গেছি। আজ পরিবেশটা কেমন যেন থমকে আছে। মোড়ে মোড়ে পুলিশও চোখে পড়ছে। বুঝতেই পারছি দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসিকে কেন্দ্র করে এই পরিস্থিতি।
জানা গেছে, মুজাহিদকে ফরিদপুরের পশ্চিম খাবাসপুর এলাকার আইডিয়াল ক্যাডেট মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে দাফন করা হবে।
রাতেই ফাঁসি কার্যকর হবে এমন খবরে এরই মধ্যে জামায়াত-শিবিরের ফরিদপুরের শীর্ষ নেতাকর্মী ও ফরিদপুরের স্বজনরা আইডিয়াল ক্যাডেট মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে অবস্থান করছেন।
ফেরি পার হতেই চোখে পড়ল আরো কয়েকদফা পুলিশি টহল। কোনো গাড়িকেই মহাসড়কে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে ফাঁসির রায় কার্যকর করাকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরে ব্যাপক নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।
রাত ৮টার পর মুজাহিদের বাড়ি ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) মোতায়েন করা হয়েছে।
এছাড়া ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শহর জুড়ে র্যাব টহল দিচ্ছে। এর বাইরে সাদা পোশাকেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা জোরদারে মাঠে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৫
জেপি/এসএইচ