ঢাকা: খাদ্য অধিদপ্তরে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় একজন যুগ্ম-সচিব, দুজন উপ-সচিব, খাদ্য অধিদপ্তরের একজন পরিচালকসহ মোট ৫৩ জনকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (২২ নভেম্বর) দুদকের উপ-পরিচালক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা হামিদুল হাসান সংশ্লিষ্টদের কাছে তলবি নোটিশ পাঠান।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যাদের তলব করা হয়েছে তারা হলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) ও বিভাগীয় নির্বাচন কমিটির (ডিপিসি) সভাপতি (বর্তমানে পরিচালক-সংগ্রহ) ইলাহী দাদ খান, খাদ্য ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপসচিব (বর্তমানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব) নাসিমা বেগম, সরকারি কর্মকমিশনের সাবেক উপ-পরিচালক ও উপ-সচিব মাহবুবুর রহমান ফারুকী, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ইফতেখার আহমেদ ও সিনিয়র সহকারী সচিব রোকেয়া খাতুন।
এছাড়া ডিপিসির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আইউব আলী, সাবেক সিস্টেম অ্যানালিস্ট আসাদুর রহমান, হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার আরিফ হোসেন ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ডেটাবেজ অ্যাডমিন আবুল কাসেম।
এছাড়া পৃথক নোটিশে জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরি নেওয়া ৪৪ খাদ্য পরিদর্শককেও তলব করা হয়েছে। এরা হলেন, শরীয়তপুর উপজেলার খাদ্য পরিদর্শক মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, সিলেট কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মো. জহিরুল ইসলাম, সিলেট সদরের অপূর্ব কুমার রায়, সাভার উপজেলার আবু জাকির মোহাম্মদ রিজওয়ানুর রহমান, ফরিদপুর বোয়ালমারী উপজেলার আসমা রহমান, মানিকগঞ্জ হরিরামপুরের আসমা ইসলাম, সিলেট বিয়ানীবাজারের জাহানারা জলি, শেরপুর নয়াবিল টিপিসির অলিউর রহমান, জামালপুর সদর উপজেলার সানজিদা সুলতানা, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার উম্মেহানি, সিলেট বিশ্বনাথ উপজেলার মোহাম্মদ মোহাইমিনুল ইসলাম ভূঞা, হবিগঞ্জ আজমিরীগঞ্জের প্রতাপ কুমার সরকার, পাবনা চাটমোহর উপজেলার খাদ্য পরিদর্শক কোহিনুর আক্তার, সুনামগঞ্জ ধর্মপাশার মীর আরিফুর রহমান, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব, ময়মনসিংহ গয়েশপুর উপজেলার মো. সাজ্জাদ হোসেন খান পাঠান, নেত্রকোনা সদর উপজেলার হিমেল চন্দ্র সরকার, ঢাকা সিএসডির মোহাম্মদ রইছ উদ্দিন, শেরপুর সদর উপজেলার সালমা আক্তার, জামালপুর এলএসডির শামছুন নাহার, টাঙ্গাইল ঘাটাইলের ইয়াসির আরাফাত, টাঙ্গাইল নাগরপুর উপজেলার মো. এদিব মাহমুদ, পটুয়াখালী গলাচিপা উপজেলার হালিমা আহমেদ, ঝালকাঠি সদর উপজেলার রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস, কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার মোহাম্মদ তৈয়ব উল্যাহ খান, নওগাঁ ধামুইরহাট উপজেলার শেখ মো. জাকারিয়া হাসান, নওগাঁ বদলগাছির মোহাম্মদ নূরুজ্জামান, নওগাঁ পোরশা উপজেলার মো. আতিকুর রহমান, বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলার মোছা. মমতাজ বেগম, জামালগঞ্জ এলএসডির কানিজ শারমিন, পাবনা আটঘরিয়া উপজেলার মো. জুনায়েদ কবীর, মানিকগঞ্জ সিংগাইর উপজেলার সেলিনা আক্তার, সিরাজগঞ্জ কাজীপুর উপজেলার মোহাম্মদ আলী মিঞা, রংপুর মিঠাপুকুর উপজেলার মোছা. জাকিয়া সুলতানা, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার খাদ্য পরিদর্শক অনিমেষ কুমার সরকার, নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার মোছা. জেসমিন আক্তার, নীলফামারী সৈয়দপুর উপজেলার মো. রায়হান কবির, রংপুর পীরগঞ্জ মিঠাপুকুর টিপিসির মো. শরিফুল ইসলাম, সাতক্ষীরা দেবহাটার বিল্লাল হোসেন, বাগেরহাট মংলা উপজেলার মো. আবুল হাশেম, পটুয়াখালি কাঁঠালতলি উপজেলার ইসরাত জাহান মনা, বরগুনা সদর উপজেলার আরিফা সুলতানা, সুনামগঞ্জ দিরাই উপজেলার আশীষ কুমার রায় ও বরিশাল গৌরনদী উপজেলার বাসিন্দা (চাকরিতে যোগ দেননি) মো. আবুল কাসেম।
গত ৭ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক বাদী হয়ে ৫৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, খাদ্য অধিদপ্তরের তৃতীয় শ্রেণির ১০টি ক্যাটাগরিতে ১ হাজার ৫৫২টি শূন্য পদ পূরণের জন্য ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। প্রার্থীদের আবেদনপত্র তালিকাভুক্ত করাসহ ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত যাবতীয় কাজের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ডেভেলপমেন্ট প্ল্যানার্স অ্যান্ড কনসালট্যান্টসের (ডিপিসি) সঙ্গে অধিদপ্তরের চুক্তি হয়।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অধিদপ্তরের বিভাগীয় বাছাই কমিটির পাঁচজন সদস্য ও ডিপিসির চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারী অবৈধভাবে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরির সুযোগ করে দিয়েছেন। পরীক্ষায় ফলাফল প্রকাশে কম্পিউটার সফটওয়্যার পরিবর্তন করে মেধাবীদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের ফলাফলে অধিক নম্বর প্রাপ্তি দেখিয়ে ৪৪ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৫
এডিএ/এমজেএফ/