ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্থানীয় নির্বাচন

‘খেয়াল’ হলো ইসির, মন্ত্রীদের প্রচারণার সুযোগ বাদ

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৫
‘খেয়াল’ হলো ইসির, মন্ত্রীদের প্রচারণার সুযোগ বাদ

ঢাকা: অবশেষে খেয়াল হলো নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিসহ অতিগুরুত্বপূর্ণ সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের প্রচারণার সুযোগ এখন আর রাখতে চায় না নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।


 
স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচনের বিলে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর দলীয়ভাবে মেয়র পদে নির্বাচনের বিষয়টি চূড়ান্ত হয় শনিবার (২১ নভেম্বর)।
 
সে অনুযায়ী, নির্বাচন বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে ইসি।

রোববার (২২ নভেম্বর) খসড়াটি অনুমোদনের জন্য দ্বিতীয় দফায় তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এতে মন্ত্রী-এমপিসহ অতিগুরুত্বপূর্ণ সুবিধাভোগীদের প্রচারণার সুযোগ রাখা হয়নি। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন আসলে তা চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন করবে সংস্থাটি।
 
এর আগে গত ৫ নভেম্বর পাঠানো খসড়া আচরণ বিধিমালায় মন্ত্রী-এমপিসহ অতিগুরুত্বপূর্ণ সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের প্রচারণার সুযোগ রেখেছিলো ইসি।
 
তখন (৮নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আপনারা এ বিষয়টি যদি আগে আমাদের বলতেন, তবে আর অন্তর্ভূক্ত হতো না। এটা ভুলে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা কেউ খেয়াল করিনি। এটা ঠিক হয়নি। ’
 
তার এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলানিউজে-মন্ত্রী-এমপিদের প্রচারণার সুযোগ বেখেয়ালে, এমন খবর প্রকাশিত হলে অন্যান্য মিডিয়াতেও তা ফলাও করে প্রচারিত হয়। এরইমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ও ইসির সেই খসড়া বিধিমালাটি ফেরত পাঠায়। একইসঙ্গে মন্ত্রণালয় মন্ত্রী-এমপিদের সুযোগ দেওয়ার বিধানটি বাদ দিতে বলে।
 
সূত্রগুলো জানিয়েছে, নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় এখন মন্ত্রী-এমপিসহ অতিগুরুত্বপূর্ণ সুবিধাভোগীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন না বলে বিধান রাখা হয়েছে।
 
সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলতে-প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রকে বুঝিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
 
এদিকে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার খসড়াও পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ে। এতে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম তফসিল ঘোষণার পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়ার বিধান রাখা হচ্ছে। অর্থাৎ মেয়র পদে দলীয়ভাবে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার পর একটি জেলায় দলগুলোর কোন ব্যক্তি প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন সেই ব্যক্তির নাম ইসিকে জানাতে হবে।
 
অন্যদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সুযোগও রাখা হয়নি। আবার মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে ১০০ ভোটারের সমর্থন রাখার বিধানটি আনা হচ্ছে। এই ১০০ ভোটারের মধ্যে পাঁচজনের তথ্য সফটওয়্যারের মাধ্যমে দৈবচয়নের ভিত্তিতে যাচাই করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
 
গত ২ নভেম্বর স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচনের সংশোধিত আইনের অধ্যাদেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি। এরপর তা ৩ নভেম্বর গেজেট আকারে প্রকাশ হয়। এরপর তড়িঘড়ি করে নির্বাচন বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালা খসড়া চূড়ান্ত করে গত ৫ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। আইন মন্ত্রণালয় আবার তা ফেরত পাঠায়। এরইমধ্যে শুধু মেয়র পদে পৌর নির্বাচন দলীয়ভাবে সম্পন্ন করার আইন সংসদে পাশ হয়।
 
এই প্রথম দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে ভোটের আয়োজন চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ডিসেম্বরেই ২৪৫টি পৌরসভায় নির্বাচন করতে চায় ইসি। এক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয় থেকে বিধিমালা অনুমোদন হয়ে আসলে এ সপ্তাহের শেষ নাগাদ এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৫
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।