ঢাকা, শনিবার, ৫ আশ্বিন ১৪৩২, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

পাকিস্তানের বিবৃতি কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:০১, নভেম্বর ২৩, ২০১৫
পাকিস্তানের বিবৃতি কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি এবং সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খানের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্যতম প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ।

এক প্রতিক্রিয়ায় বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ভিয়েনা কনভেনশনের চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিবৃতি দিয়ে পাকিস্তান কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করেছে।

একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলার মতো যৌক্তিক অবস্থান পাকিস্তানের নেই। শুধু পাকিস্তান কেন কোনো রাষ্ট্রেরই নেই। এটি কূটনৈতিক শিষ্টাচারের চরম লঙ্ঘন।

পাকিস্তান যদি এখনও বাংলাদেশকে পূর্ব পাকিস্তান ভেবে থাকে, তাহলে তারা বিশাল বড় ভুল করছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আজকে ৪৪ বছর পর পাকিস্তানের এই অযাচিত উপদেশ, বক্তব্য অর্থহীন– বলেন তুরিন আফরোজ।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে এ দেশীয় দোসরদের সঙ্গে নিয়ে যে যুদ্ধাপরাধ পাকিস্তানের সেনাবাহিনী করেছে, তার বিচারের ব্যাপারে পাকিস্তান নিশ্চুপ থেকেছে বরাবরই। অথচ জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী পাকিস্তানেরই উচিত ছিলো গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তার সেনাবাহিনী এবং দায়ীদের বিচার করা। উচিত ছিলো বাংলাদেশ যে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, একে সাধুবাদ জানানো, এতে সহযোগিতা করা।

তুরিন বলেন, পাকিস্তানের কাছে আমরা ক্ষতিপূরণ পাই। আজ পর্যন্ত তার হিসেব-নিকেশ নিয়ে কোনো কথা বলেনি এমনকি একাত্তরে অপরাধের জন্য রাষ্ট্র হিসেবে ক্ষমা প্রর্থনা করেনি পাকিস্তান।

পাকিস্তানের যেসব যুদ্ধাপরাধীরা রয়েছে, তারা নিজেরা যদি এর বিচার করতে না পারে, তাহলে বাংলাদেশের হাতে তাদের তুলে দেওয়ার জন্যও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বানও জানান তুরিন।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খানের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যেও ক্ষব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ট্রাইব্যুনালের এ প্রসিকিউটর।

তুরিন আফরোজ বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো বা খারাপ এটা নিয়ে আমাদের কোনো দ্বিধা নেই। দ্বিধার জন্ম হয় তখনই, যখন পাকিস্তান রাষ্ট্রটি যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় বা তাদের সংসদে এ নিয়ে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।

অতীতের তিক্ততা ভুলে বাংলাদেশ সব সময়ই অগ্রসর হতে চায়। সবার সঙ্গেই আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চাই। কারো সঙ্গেই বৈরিতা চাই না। তাই বলে অপরাধী কিংবা অপরাধের সঙ্গে বন্ধুত্ব হতে পারে না। সন্ত্রসী, অপরাধী একটি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব হতে পারে না।

অতীতের তিক্ততা ভুলতে অপরাধ স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং যুদ্ধাপরাধরে বিচারের উদ্যোগ নিতেও নিসার আলীকে আহ্বান জানান তুরিন আফরোজ।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৫
এমএইচপি/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।