ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২০২৫ সালে দেশে ৫ জনে একজন প্রবীণ থাকবেন

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৫
২০২৫ সালে দেশে ৫ জনে একজন প্রবীণ থাকবেন ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বর্তমানে দেশের স্বাস্থ্যখাত ও অর্থনৈতিক খাত দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, যে কারণে বাড়ছে প্রবীণের হার। দেশে এখন ১ কোটি ৬০ লাখ প্রবীণ ব্যক্তি রয়েছেন।

২০২৫ সাল নাগাদ দেশে প্রবীণদের সংখ্যা হবে দুই কোটি, যা মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশ। ফলে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন থাকবেন প্রবীণ।

প্রবীণদের কল্যাণ ও সেবায় নিবেদিত তরুণদল‘এজিং সাপোর্ট ফোরামের’ জরিপে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ ফোরাম দেশি ও বিদেশি প্রবীণদের সংখ্যা ও উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে।

জরিপে আরও দেখা গেছে, স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশেও মানুষের গড়আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ বছর। যেখানে ভারতের ৬৭, নেপাল ৬৭ ও পাকিস্থানের মাত্র ৬৬ বছর। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের মানুষের গড়আয়ু বেশি।

অন্যদিকে বিশ্বে সবচেয়ে মোনাকোর মানুষ বেশিদিন বাঁচে। তাদের গড়আয়ু প্রায় ৯৪ বছর। অন্যদিকে জাপানে ৮৪, সিঙ্গাপুরে ৮২, হংকংয়ে ৮২, অস্ট্রেলিয়ায় ৮৪ ও চায়নায় গড়আয়ু ৭৪ বছর।

এজিং সাপোর্ট ফোরামের সভাপতি হাছান আলী বলেন, বর্তমানে দেশে ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ প্রবীণ। ২০২৫ সালে এই সংখ্যা আরও বেড়ে প্রতি পাঁচজনে একজন প্রবীণ ব্যক্তি থাকবেন। তাই প্রবীণদের নিয়ে আমাদের এখনই ভাবতে হবে। এই বিশাল জনসমষ্টির অর্জিন জ্ঞান নবীনদের কাজে লাগাতে হবে। প্রবীণদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থলের পাশাপাশি সব ধরনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রবীণ জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়নে তরুণদের নানা উদ্যোগ নিতে হবে। প্রবীণ নিবাস, হোম কেয়ার, ডে-কেয়ার সেন্টার, প্রবীণ সংঘ, প্রবীণ বিমা ও প্রবীণ ভাতাসহ নানাক্ষেত্রে তরুণরা বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, কোনো অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা ১০ থেকে ১২ শতাংশ প্রবীণ হলে, ঐ জনসংখ্যাকে বার্ধক্য জনসংখ্যা বলে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালে বিশ্ব জনসংখ্যার ক্ষেত্রেও ৫ জনে একজন থাকবেন প্রবীণ।
 
রাষ্ট্রসংঘ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য ৬০ বছর ও উন্নত অঞ্চলের জন্য ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক মানুষকে প্রবীণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
 
ইউনাইটেড নেশনস পপুলেশন ফান্ড এবং হেল্পএজ ইন্ডিয়ার একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে ২০১১ সালে প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা ছিল ৯ কোটি। ২০২৫ সালে তা ১৭ কোটি ৩০ লাখে পৌঁছাবে। বর্তমানে ৯ কোটি নাগরিকের ৩ কোটি একা বসবাস করেন এবং ৯০ শতাংশ প্রবীণ নাগরিককেই বেঁচে থাকার জন্য কাজ করতে হয়।
 
বর্তমানে বিশ্বে প্রতি দশজনে একজন ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ আছেন। ২০৫০ সালে বিশ্বে প্রবীণ জনসংখ্যা শিশু জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে। বর্তমানে ভারত ও চীনে বেশি প্রবীণের বসবাস। আমাদের দেশেও বাড়ছে প্রবীণ। বর্তমানে প্রবীণ জনগোষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম আতীকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে। তাদের নিরাপত্তা দেওয়া বড় চ্যালেঞ্জ। প্রবীণদের সবচেয়ে বেশি দরকার সমবয়সী সঙ্গী ও সঠিক চিকিৎসা। প্রবীণদের কথা অবহেলা করা যাবে না, তাদের সিদ্ধান্ত আগ্রহ সহকারে নিতে হবে।
 
প্রবীণদের জীবন আগের মতো চলে না। উচ্চ রক্তচাপ, বাত, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যানসার, গ্যাস্ট্রিক, ডিমনেশিয়ার, চোখে ছানি, কোষ্ঠকাঠিন্য, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। তাই প্রবীণদের যত্ন নিতে হবে নবীনদেরই, বলেন এ গবেষক।
 
তিনি আরও বলেন, যে হারে দেশে প্রবীণের সংখ্যা বাড়ছে, এতে করে তাদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। কারণ জীবনের শেষ ধাপে পৌঁছে মানুষ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হন। প্রবীণদের সুরক্ষায় এসব চ্যালেঞ্জ আমাদেরও মোকাবেলা করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৫
এমআইএস/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।