ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কক্সবাজারের মহেশখালীর সালামত উল্লাহ খানসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে আগামী বছরের ১৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিলের দিন পুনর্নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
২৩ নভেম্বর একইসঙ্গে এ মামলায় নতুন একজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের দিন ধার্য ছিল। তবে আরও দেড় মাসের সময় চেয়ে আবেদন জানান প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত। শুনানি শেষে আগামী ১৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলার আসামিরা হলেন- সালামত উল্লাহ খান (৭৭), মৌলভি জকরিয়া শিকদার(৭৮), মো. রশিদ মিয়া বিএ (৮৩), অলি আহমদ (৫৮), মো. জালাল উদ্দিন (৬৩), মৌলভি নুরুল ইসলাম (৬১), মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাবুল (৬৩), মমতাজ আহম্মদ (৬০), হাবিবুর রহমান (৭০), মৌলভি আমজাদ আলী (৭০), মৌলভি আব্দুল মজিদ (৮৫), বাদশা মিয়া (৭৩), ওসমান গণি (৬১), আব্দুল শুক্কুর (৬৫), মৌলভি রমিজ হাসান (৭০), মো. জাকারিয়া (৫৮), মো. জিন্নাহ ওরফে জিন্নাত আলী(৫৮), মৌলভি জালাল (৭৫) এবং আব্দুল আজিজ (৬৮)।
এ মামলায় এর আগে আসামি ছিলেন ২০ জন। তবে গ্রেফতারের পর মৌলভি শামসুদ্দোহা (৮২) অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ায় তার নাম আসামি তালিকা থেকে বাদ গেছে।
গত ০৮ অক্টোবর এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তদন্ত সংস্থা। তাদের বিরুদ্ধে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন, ধর্মান্তর ও দেশান্তরকরণের ১৩টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে ৯৪ জনকে হত্যা, অসংখ্য নারী ধর্ষণ ও নির্যাতন এবং ব্যাপক লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলাম পার্টির সক্রিয় নেতাকর্মী ছিলেন। এর মধ্যে সালামত উল্লাহ খান মানবতাবিরোধী অপরাধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থক হিসেবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পক্ষে কাজ করেছিলেন অন্যরা।
আসামিরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা সংঘটনে সার্বিক সহায়তা প্রদান এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিজেরাও ওই সব অপরাধ করেছেন বলে
আসামিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- সালামত উল্লাহ, রশিদ মিয়া, মৌলভি নুরুল ইসলাম, বাদশা মিয়া, ওসমান গণি ও মো. জিন্নাহ। তাদের মধ্যে বাদশা মিয়া বিশেষ শর্তে জামিনে আছেন। বাকি ১৩ আসামি পলাতক রয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. নূরুল ইসলাম গত বছরের ১২ মে থেকে গত ৮ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের অপরাধের তদন্ত শেষ করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে আসামিদের বিরুদ্ধে ১১১ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনের সঙ্গে সর্বমোট ১৩৭ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণপত্রসহ অন্যান্য নথিপত্র রয়েছে।
মামলায় তদন্তকালে ১২৬ জনের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৫
এমএইচপি/এএসআর