ঢাকা: টেকনাফ পৌরসভার মেয়র থাকাকালে দুর্নীতির একটি অভিযোগ থেকে কক্সবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে অব্যাহতি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে অব্যাহতির বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৩ নভেম্বর) দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছে।
মেয়র থাকাকালে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে তাকে দায়মুক্তি দিলেও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বদির বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
আবদুর রহমান বদি ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত টেকনাফ পৌরসভার মেয়র ছিলেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফ পৌরসভার মেয়র থাকাকালে তার বিরুদ্ধে পৌরসভার রাজস্ব ও উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডারে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। একই অভিযোগ ছিল টেকনাফ পৌরসভার প্রকৌশলী লতিফুর রহমান ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার ইসমাইলের বিরুদ্ধে।
২০০৪ সালের ডিসেম্বরে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। দীর্ঘদিন অভিযোগটি ফাইলচাপা থাকার পর চলতি বছরের শুরুর দিকে কমিশন থেকে পুনরায় দুদকের চট্টগ্রাম-২ এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়কে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান অভিযোগটির অনুসন্ধান করেন।
অনুসন্ধানে তাদের বিরুদ্ধে দালিলীকভাবে অভিযোগের প্রমাণ না করতে পারায় নথিভুক্তির (অব্যাহতি) জন্য কমিশনের কাছে সুপারিশ করেন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা। কমিশন যাচাই-বাছাই করে অব্যাহতির পক্ষে সুপারিশ করে। এর ফলে ওই অভিযোগ থেকে বদিসহ অন্য অভিযুক্তরা অব্যাহতি পেয়েছেন।
এ অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেও বদির বিরুদ্ধে দুদকের করা একটি মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার ৬৬৯ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন এবং অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের বৈধতা দেখাতে কম দামি সম্পদের বেশি দাম (১ কোটি ৯৮ লাখ ৩ হাজার ৩৭৫ টাকা) দেখানোর অভিযোগে গত বছরের ২১ আগস্ট বদির বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলা করে দুদক।
এ বছরের ৬ মে ওই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় দুদক। এতে বদির বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভুত ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৯৪২ টাকার সম্পদ অর্জন ও দুদকের কাছে দেওয়া সম্পদের বিবরণীতে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৫৩ হাজার ২৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার কথা বলা হয়।
গত বছরের ১২ অক্টোবর এ মামলায় সংসদ সদস্য বদি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ১৬ অক্টোবর নিম্ন আদালত তার জামিনের আবেদন খারিজ করেন। এ আদেশের পর তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন (রিভিশন) করেন। পরে হাইকোর্ট তার ছয়মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদক আবেদন করলে চেম্বার আদালত তাতে কোনো আদেশ দেননি। এর ফলে গত ৩০ অক্টোবর সংসদ সদস্য বদি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৫
এডিএ/এএসআর