ঢাকা: স্থানীয় সরকারের অন্যতম সংস্থা জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কিছুই করণীয় নেই। কেননা, ২০০০ সালে আইন হলেও এখনো নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন ও বিধিমালা প্রস্তুত করে দেয়নি সরকার।
জাতীয় সংসদকে এমনটিই জানিয়েছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। এর আগে সংসদ সচিবালয় থেকে জেলা পরিষদ নির্বাচন বন্ধ রাখার কারণ কি এবং করে নাগাদ জেলা পরিষদ নির্বাচন হবে, তা ইসির কাছে জানতে চাওয়া হয়।
ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আতিয়ার রহমান কী কারণে নির্বাচন বন্ধ আছে সে ব্যাখ্যা দিয়ে সংসদ সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে রোববার (২২ নভেম্বর) একটি চিঠি দেন। যার একটি অনুলিপি বাংলানিউজের হাতেও পৌঁছেছে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘জেলা পরিষদ আইন-২০০০ এর ১৯(ক) উপ-ধারা অনুসারে পরিষদ প্রথমবার গঠনের ক্ষেত্রে সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা যে তারিখ নির্ধারণ করবে সে তারিখের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন নির্বাচন কমিশন এখনো পায়নি’।
এদিকে আইনের ২০(২) উপ-ধারা অনুসারে সরকার গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্বাচনের জন্য বিধি প্রণয়ন করবে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিধিমালা এখনও নির্বাচন কমিশনে আসেনি।
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে- ‘জেলা পরিষদ আইন-২০০০ এর ১৯(ক) উপ-ধারা অনুসারে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন না পাওয়ায় এবং ২০ ধারা (২) উপ-ধারা অনুসারে নির্বাচন পরিচালনার বিধিমালা না পাওয়ায় জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই’।
ইসির এ জবাব সংসদ অধিবেশনে মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) এক প্রশ্নের উত্তরে সংসদকে জানাবেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। লিখিত প্রশ্নটি করবেন কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য একেএম মাঈদুল ইসলাম। সংসদ সদস্যের লিখিত সেই প্রশ্নটি পাঠিয়েই তার উত্তর জানাতে সম্প্রতি ইসি সচিবকে চিঠি দেয় সংসদ সচিবালয়।
জেলা পরিষদ আইন হয়েছে ২০০০ সালে। এরপর ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে সরকার প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে জেলা পরিষদ পরিচালনা করছে। কিন্তু ১৪ বছর পার হয়ে গেলেও আইনের নির্দেশনা অনুযায়ী এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ‘অজানা’ কারণে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করে দেয়নি। যা অন্য স্থানীয় সরকারগুলোর আইনেই স্পষ্ট করে উল্লেখ আছে। এছাড়া অন্যান্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা ইসির কাছে দেওয়া হলেও জেলা পরিষদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের হাতে।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বাংলানিউজকে বলেন, সময় নির্ধারণ না এবং বিধিমালা না হওয়ায় জেলা পরিষদ নির্বাচন বহুদূর।
আইন অনুসারে, একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য এবং ৫ জন সংরক্ষিত নারী সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠিত হবে। তারা নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে নির্বাচিত হবেন। সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের নিয়েই গঠিত হবে নির্বাচকমণ্ডলী।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৫
ইইউডি/এএসআর