ঢাকা: একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃতুদণ্ড কার্যকর করা প্রসঙ্গে পাকিস্তানের দেওয়া বিবৃতিতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে দুই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় কার্যকর করার পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
সুত্র জানায়, সোমবার (২৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গ তুলে পাকিস্তানের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা এর আগেও এ ধরনের ঔদ্ধত্য দেখিয়েছিলো। এর কড়া প্রতিবাদ জানাতে হবে। ভালো করে ছবক দিতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে নির্দেশনাও দেন বলে জানায় সূত্র।
প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশের পর বিকেলে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাই কমিশনার সুজা আলম ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মিজানুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে এলে বিবৃতির জন্য কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। যদিও গতকাল রোববারই (২২ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাকিস্তানের হাই কমিশনারকে তলব করে।
পাকিস্তানের হাই কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি।
সালাউদ্দিন কাদের ও মুজাহিদের ফাঁসির পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর আমরা গভীর উদ্বেগ ও বেদনার সঙ্গে লক্ষ্য করলাম।
এর আগে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির পরও পাকিস্তান ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেয় এবং পাকিস্তানের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়।
ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিলো, পাকিস্তানের প্রতি অনুগত এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে সমর্থন করায় কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
সূত্র আরও জানায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার এ বৈঠকে কয়েকজন মন্ত্রীও আলোচনায় অংশ নেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর দিকে তাকিয়ে বলেন, কোনো কোনো বেসরকারি টেলিভিশন তাদের (সাকা-মুজাহিদ) পরিবারের সদস্যদের কান্নাকাটি বেশি করে দেখিয়েছে। ’৭১-এ তাদের যে অপরাধ সেটা দেখায়নি। তবে অন্য টেলিভিশনগুলোও অপরাধ তুলে ধরেছে।
এই আলোচনায় কোনো কোনো মিডিয়ায় ‘জোড়া ফাঁসি’ বলার বিষয়টিও উঠে আসে। এ সময় মন্ত্রীরা অনেকেই বলেন, জোড়া ফাঁসি এটাই দেশে প্রথম না, আগেও হয়েছে। জিয়াউর রহমান তো এক এক রাতে ২০/২৫ জন করে সামরিক অফিসারকে ফাঁসি দিয়েছেন। জিয়া তো গণফাঁসি দিয়েছেন!
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৫
এসকে/এমজেএফ
** পাক হাইকমিশনারকে ডেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ