ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জন্মভূমিকে চুমু খেয়ে চোখের জলে বিদায়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৫
জন্মভূমিকে চুমু খেয়ে চোখের জলে বিদায় ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার ১৫২ জন বাসিন্দা ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে তৃতীয় দফায় ভারতে গেলেন। শেষ সময়ে আত্মীয়-স্বজনদের জড়িয়ে ধরে হু-হু কান্নায় আকাশ-বাতাস যেন ভারি হয়ে ওঠে।

অনেকেই জন্মভূমিকে চুমু খেয়ে জানালেন শেষ বিদায়।

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দেবীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠের চেকিং ও লোডিং পয়েন্ট থেকে চারটি বাস ও আটটি ট্রাকে করে মালামালসহ বিলুপ্ত খাগড়াবাড়ি ছিটমহলের এসব বাসিন্দা ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন।  

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম আজম ও দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সফিকুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনারের প্রথম সেক্রেটারি রমা কান্ত গুপ্তর কাছে ১৫২ জন নতুন ভারতীয় নাগরিককে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ হস্তান্তর করেন।  

বিদায় বেলায় অনেকেই আত্মীয়-স্বজনদের জড়িয়ে ধরে হু-হু করে কাঁদতে থাকেন। কেউ আবার জন্মভূমিকে বার বার চুমু খাচ্ছিলেন।
 
এ সময় জন্মভূমি ছেড়ে যাওয়া এই নতুন ভারতীয়দের অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায় জানান স্বজনরা। চারিদিকের বাতাস যেন ভারি হয়ে ওঠে তাদের কান্নায়।  

পরে, জেলা প্রশাসন, বিজিবি ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যানবাহন, মালামালসহ তাদের নিয়ে নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া বিজিবি বিওপির পথে রওনা দেন।  

দুপুরে ডাঙ্গাপাড়া বিজিবি বিওপির সদস্যরা নতুন ভারতীয়দের ভারতের খালপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প ও কোচবিহার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হস্তান্তর করবেন।
 
নতুন ভারতীয়দের গ্রহণ করতে ভারতের কোচবিহার প্রশাসন চিলাহাটি-হলদিবাড়ী সীমান্তে নোম্যান্স ল্যান্ডে ১৫০ গজের একটি নতুন রাস্তা তৈরি করেছে। এছাড়া, বিএসএফ তাদের সীমানার ভেতরে একটি তোরণ ও মঞ্চ তৈরি করেছে।
 
২২ ও ২৩ নভেম্বর দুই দফায় পঞ্চগড় সদর, বোদা, দেবীগঞ্জ উপজেলার সাতটি ছিটমহল থেকে ১৯৫ জন ভারতে যাওয়ায় এ নিয়ে তিন দফায় পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত ছিটমহলগুলো থেকে মোট ৩৪৭ জন নতুন ভারতীয় নাগরিক নিজ ভারতে গেলেন।
 
২৬ নভেম্বর সর্বশেষ চতুর্থ দফায় জেলার দেবীগঞ্জ ও বোদা উপজেলার দু’টি ছিটমহলের ২৩ পরিবারের ১০৮ জন একই পথে ভারতে যাওয়ার কথা রয়েছে।
 
চলতি বছরের ৬ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত জনগণনায় পঞ্চগড় জেলার বিলুপ্ত ৩৬ ছিটমহলের ৪৮৭ জন ভারতে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন। জনগণনার পর দেবীগঞ্জ উপজেলার কোটভাজনি ছিটমহলে একটি ও দহলা খাগড়াবাড়ি ছিটমহলে তিন শিশুর জন্ম নেওয়ায় এ সংখ্যা ৪৯১ এ দাঁড়ায়।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৫    
এমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।