ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পাকিস্তানের বিবৃতি-বিএনপির বক্তব্য একসূত্রে গাঁথা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৫
পাকিস্তানের বিবৃতি-বিএনপির বক্তব্য একসূত্রে গাঁথা ছবি: দীপু মালাকার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের পর বিচার নিয়ে পাকিস্তান ও বিএনপি-জামায়াতের বিবৃতি-বক্তব্য একসূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেছেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের নেতারা।

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে পাকিস্তান ও বিএনপির আনুষ্ঠানিক বিবৃতি-বক্তব্যের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এ মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের এমন অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়টি সার্কসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে তুলে ধরার জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।

নেতারা বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে বিএনপি এতোদিন নীরব থাকলেও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর মানবতাবিরোধীদের পক্ষে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়েছে।

তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকে রাজনৈতিক ও প্রহসনের বিচার বলেও মন্তব্য করেছেন।

তারা বলেন, বিএনপির এমন বক্তব্যে শুধু বিচার ব্যবস্থাকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়নি, মানবতাবিরোধীদের সমর্থনও করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সহ-সভাপতি লে. জে. (অব.) হারুন অর রশিদ বলেন, পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি বাংলাদেশের
অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ। যা কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করেছে। এর আগেও পাকিস্তান এটি করেছে।

তিনি বলেন, পাকিস্তান যদি এই অযাচিত হস্তক্ষেপ ও যুদ্ধাপরাধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা না করে তাহলে সরকারকে আহ্বান জানাবো তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে।

তিনি আরও বলেন, সম্পর্ক নির্ভর করে দু’টি দেশের পারস্পরিক সম্মান-মর্যদার উপর। পাকিস্তান যে আদর্শই ধারণ করুক না কেন, তাতে আমাদের কিছু যায়-আসে না। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস-আদর্শের উপর আঘাত করলে আমরা তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাই না।

আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়, তাহলে পাকিস্তানের যুদ্ধাপরাধের বিচারও করতে হবে।

এ দাবির সমর্থনে দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও ঘোষণা দেন ফোরামের এ নেতা।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া বিতর্কিত করতে দেশি-বিদেশি নানা সংগঠন অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। শুধু তাই নয়, দেশের অন্যতম একটি রাজনৈতিক দল একজন শীর্ষ অপরাধীর পক্ষে সাফাই গেয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে সর্বোচ্চ দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর পক্ষে এভাবে সাফাই গাওয়া বিচার ব্যবস্থার প্রতি চরম অশ্রদ্ধার প্রকাশ।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করে বিদেশি লবিস্ট ফার্মের মাধ্যমে দেশের ভেতরে-বাইরে পরিকল্পিত বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। ফলে কোনো কোনো দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে রাজনৈতিক নেতাদের বিচার বলে প্রচার করা হচ্ছে।    

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) কেএম শফিউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ফোরামের মহাসচিব সাংবাদিক হারুন হাবিব, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান শওকত, সহ-সভাপতি লে. জে. (অব.) হারুন অর রশিদ, সাবেক আইজি নুরুল আলম ও ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মেজর জে. (অব.) একে মোহাম্মদ আলী শিকদার।

পাকিস্তানকে ফেরত দেওয়া দেশটির সেনাবাহিনীর ১৯৫ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর বিচারের পাশাপাশি বাংলাদেশের পাওনা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্যও সে দেশের সরকার-জনগণকে আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৫/আপডেট: ১৪১০
এমএইচপি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।