ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৩য়-৪র্থ শ্রেণীর জন্য উচ্চশিক্ষিতরাও

দুদকের ৪২ পদে প্রার্থী সাড়ে ৬১ হাজার!

আদিত্য আরাফাত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৫
দুদকের ৪২ পদে প্রার্থী সাড়ে ৬১ হাজার!

ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিভিন্ন পদে লোক নেওয়া হবে মাত্র ৪২ জন। আর এর বিপরীতে নিয়োগ পরীক্ষার যুদ্ধে নামছেন ৬১ হাজার ৫৮০ প্রার্থী।

তীব্র প্রতিযোগিতামূলক এ পরীক্ষায় দুদকের প্রতিটি পদে চাকরির জন্য লড়বেন ১ হাজার ৪৬৬ জন।

মোট ৯ ক্যাটাগরিতে ৪২টি শূন্য পদে লোক নিচ্ছে দুদক। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা হবে প্রথম শ্রেণীর পদমর্যাদার সহকারী পরিচালক পদে। এ পদে লোক নেওয়া হবে মাত্র ১১ জন। এ ১১টি শূন্যপদের জন্য ২৯ হাজার ৯১৬ জন আবেদন করেছেন। প্রতিটি সহকারী পরিচালক পদে চাকরির জন্য লড়বেন ২ হাজার ৭২৪ জন।
প্রতিযোগিতার দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে তৃতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদার সহকারী পরিদর্শক পদটি। মাত্র ১২টি শূন্যপদের বিপরীতে লড়বেন ২২ হাজার ৭৬৯ জন। প্রতিটি পদের জন্য ১ হাজার ৮৯৭ জন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

এছাড়া দ্বিতীয় শ্রেণীর উপ-সহকারী পরিচালক পদে ৭টি শূন্যপদের বিপরীতে ৫ হাজার ৯৪২ জন এবং কোর্ট পরিদর্শকের ১টি শূন্যপদের বিপরীতে ২৪৪ জন আবেদন করেছেন। এছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদের মধ্যে ২টি সাঁট মুদ্রাক্ষরিকের শূন্যপদের জন্য ২৯৭ জন, ৬টি ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের শূন্যপদের জন্য ১ হাজার ৭৯৬ জন, টেলিফোন অপারেটরের ১টি শূন্যপদে ১৭৬ জন এবং অফিস সহায়কের ১টি শূন্যপদে ৩১৫ জন আবেদন করেছেন।

দুদকের প্রশাসন ও সংস্থাপন বিভাগের মহাপরিচালক মো. শহিদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, দুদকের নিয়োগ পরীক্ষাগুলোতে তীব্র প্রতিযোগিতা হয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে দুদকে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে। বরাবরের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ এ পরীক্ষাটি নেবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তৃতীয় শ্রেণীর বিভিন্ন পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরধারীরাও আবেদন করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তরধারী মুনির হোসেন আবেদন করেছেন তৃতীয় শ্রেণীর সহকারী পরিদর্শক পদে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদ বাদ দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে পাস করে এ পদে কেন আবেদন করলেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে মুনির বলেন, মাস্টার্স পাস করার পর টানা ৪ বছর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে জুতার তলা ক্ষয় করেছি। মৌখিক পর্যন্ত গিয়ে আর টিকতে পারি না। হয়তো মামা-চাচা নেই তাই।
 
তিনি বলেন, দ্রুত চাকরি দরকার। তাছাড়া সার্টিফিকেট অনুযায়ী চাকরির বয়সও প্রায় শেষ। পদ নয়, চাকরি হওয়াটাই বড় কথা।

তৃতীয় শ্রেণীর ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদের জন্য উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ চাওয়া হলেও এ পদেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ আবেদনকারী পাওয়া গেছে। মেহরাব হাসান নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্নাতকোত্তরধারীকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো- ‘উচ্চশিক্ষার সনদ থাকতে এ পদে আবেদন করলেন যে…?’ খানিকটা ক্ষোভ ও বিদ্রুপের সুরে তিনি বললেন, ‘উচ্চশিক্ষার সনদ ভিজিয়ে পানি খাচ্ছি ভাই, তাই টাইপিস্টের পদে আবেদন করেছি’।

এদিকে চতুর্থ শ্রেণীর অফিস সহায়ক পদেও দেখা গেছে আবেদনকারীদের কয়েকজন স্নাতকধারী।

দুদক সূত্র জানায়, আগামী শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে (সহকারী পরিচালক ও উপ-সহকারী পরিচালক) প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। পরবর্তীতে অন্যান্য পদেও নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৫
এডিএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।