রাজশাহী: রাজশাহীতে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে মারা যাওয়া এক প্রসূতির স্বজনদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিল আদায়ের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (২৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মহানগরীর লক্ষ্মীপুর ঝাউতলা মোড়ের বেসরকারি আমানা হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, ওই রোগীর মৃত্যুর পরও তার মরদেহ ক্লিনিকের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) আটকে রেখে ৪৩ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দেওয়া হয় তাদের হাতে। পরে তারা এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর আমানা হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মোবারক হোসেনকে সেখানে পেয়ে আটকে রাখে রোগীর স্বজনরা।
মৃত রোগীর স্বজনরা বলেন, বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার শান্তাহার গ্রামের কামরুজ্জামানের স্ত্রী সুরভী জামানকে মঙ্গলবার বিকেলে আমানা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির কিছুক্ষণ পরেই তার সিজার করা হয়। নবজাতক সুস্থ থাকলেও হৃদরোগের কারণে প্রসূতি সুরভী জামানের অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
পরে, তাকে ওই ক্লিনিকের আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত তার মরদেহ বের করা হবে না বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সুরভীর মরদেহ আইসিইউ থেকে বের করে দেয়। সেই সঙ্গে ৪৩ হাজার টাকার বিলও ধরিয়ে দেওয়া হয়।
সুরভীর স্বামী কামরুজ্জামান বলেন, প্রায় ১৫ হাজার টাকার অতিরিক্ত বিল দেওয়া হয়েছে। টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত মরদেহ দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয় তাদের। পরে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয় এবং রাত সাড়ে ৯টার তারা মরদেহ নিয়ে যান।
তিনি বলেন, বিলে ওষুধ বাবদ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা, আইসিইউ ভাড়া ১৬ হাজার টাকা, প্যাথলজি চার্জ ৩ হাজার টাকা, কেবিন চার্জ ৪ হাজার টাকাসহ অন্যান্য চার্জ ৩ হাজার ৭০০ টাকা ধরা হয়েছে। মৃত্যুর পরও আইসিইউ বিল ধরা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত বিল করা হয়েছে।
তবে হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মোবারক হোসেন অতিরিক্ত বিল আদায়ের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, যা বিল হয়েছে, তাই রোগীর স্বজনদের দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু রোগীর স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে পেয়ে আটকে রাখেন। পরে হাসপাতাল কর্মচারীরা গিয়ে তাকে মুক্ত করেন।
মহানগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ হাসান বাংলানিউজকে বলেন, তিনি ঘটনাটি জানে না। তবে খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
এসএস/এমজেড