ঝিনাইদহ: ২৬ নভেম্বর, ২০১৫। বৃহস্পতিবার।
স্বাধীনতার ৪৪ বছরেও অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে শহীদদের গণকবর। পুনর্বাসন করা হয়নি শহীদ পরিবারগুলোকে। মিলাদ মাহফিলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে এই দিবসটি।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার পূর্বে কুমার নদের পাড়ে ২৭ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ৫টি অবহেলিত গণকবর বুকে ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি বহন করে চলেছে কামান্না গ্রাম।
১৯৭১ সালের এই দিনটি মুক্তিযুদ্ধ তথা শৈলকুপাবাসীর জীবনে ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞের দিন। এদিন ভোরে ফজরের আজানের সেই সুমধুর ধ্বনিকে হঠাৎ তলিয়ে গর্জে উঠল রাইফেল-স্টেনগান, এসএলআরসহ অত্যাধুনিক সব আগ্নেয়াস্ত্র। পাকিস্তানি সেনা ও তাদের এদেশীয় দোসর আলবদর, রাজাকার, আল শামসরা রক্তের বন্যা বইয়ে দেয় কামান্না গ্রামে।
পাখির মতো গুলি করে নির্বিচারে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছিলো দুই সহযোগীসহ ২৭ জন মুক্তিপাগল দামাল ছেলেকে।
১৯৭১ সালের ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যার পরপরই ৪২ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দামাল ছেলে শৈলকুপা সদরকে হানাদার মুক্ত করার উদ্দেশ্য নিয়ে কামান্নায় এসে আশ্রয় নেয়। এদের বাড়ি পার্শ্ববর্তী মাগুরা জেলার হাজিপুর এলাকার বিভিন্ন গ্রামে।
এদিকে রাতের আধারে শুরু হয় রাজাকার-আলবদর-আল শামসদের-গোপন অপতৎপরতা। হঠাৎ আক্রমণে ঘুম ভাঙা মুক্তিযোদ্ধা হতবিহ্বল-বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। যে যেভাবে পারে বেরিয়ে যেতে চেষ্টা করে। ভোরে দলে-দলে লোক ঘরে, ছাদে, মেঝেতে, উঠানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ২৭ টি লাশ এক জায়গাতে জড়ো করে। স্বাধীনতা লাভের পরপরই গঠিত হয় “কামান্না ২৭ শহীদ স্মৃতি সংঘ”।
এ সরকারের কাছে শহীদ পরিবারের দাবি অচিরেই ২৭ শহীদের গণ কবর সংরক্ষণ ও তাদের পরিবারগুলোর পুনর্বাসন করা হোক।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
পিসি