ঢাকা: নারী নির্যাতন প্রতিরোধে তরুণ নেতৃত্ব সৃষ্টি করার প্রত্যয়ে গাজীপুরের মৌচাকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী স্টুডেন্টস ফোরামের চেঞ্জমেকার সম্মেলন।
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় অংশগ্রহণকারীদের পরিচিতি পর্বের মধ্যদিয়ে জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এ সম্মেলন শুরু হয়।
তবে শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। এদিন সকালে জাতীয় পতাকা ও পায়রা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. লেনিন চৌধুরী ও নারী সংগঠন নারীপক্ষের সদস্য কামরুন নাহার।
আমরাই পারি জোটের ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-২০১৫’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ চেঞ্জমেকার সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
‘তারুণ্যের শক্তিতে বন্ধ হোক, নারীর প্রতি সকল নির্যাতন’ স্লোগান নিয়ে শুরু হওয়া সম্মেলনে দেশের ৪৮টি জেলার ৯৫জন তরুণ-তরুণী অংশ নিচ্ছেন।
জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের এম সলিমুল্লাহ ফাহমি ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংস্থা আমরাই পারি জোটের কো-চেয়ারপারসন এম বি আখতার।
নারী নির্যাতন প্রতিরোধকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তা করতে পারলে পারিবারিক নির্যাতন অনেক কমে যাবে। তবে এক্ষেত্রে তরুণদের আরও সচেতনও হতে হবে।
অনুষ্ঠানে অতিথি খেলাঘরের ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, তারুণ্যের শক্তি দিয়ে তরুণদের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করতে হবে। নারী-পুরুষের দায়িত্বগুলো সমানভাগে ভাগ করলে সবাই নিজ নিজ বোধ থেকেই নির্যাতন প্রতিরোধে এগিয়ে আসবে।
তবে সবার সম্মিলিত উদ্যাগে পরিবার, রাস্তাঘাট ও কর্মস্থলে নারী নির্যাতন রোধ সম্ভব বলে মনে করেন নারীপক্ষের কামরুন নাহার।
নারীকে ‘নারী’ নয় মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করার আহ্বান জানিয়ে জোটের জাতীয় সমন্বয়কারী জিনাত আরা হক বলেন, অন্যের ওপর অভিযোগের আঙুল তোলা নয় বরং নারী নির্যাতন বন্ধে আমাদের নিজেদের ব্যক্তিগত আচরণগুলো পরিবর্তন করা জরুরি। নারীকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করার পাশাপাশি নারী-পুরুষ প্রত্যেকেই সমমর্যাদার সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে সাংবাদিক সেলিনা শিউলী ও শান্তা মারিয়া বক্তব্য দেন।
আয়োজকরা জানান, প্রশিক্ষণ ভিত্তিক তিনদিনের এ সম্মেলনে তরুণ-তরুণীদের নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ব্যক্তিগত আচরণ পরিবর্তন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে করণীয় এবং স্টুডেন্ট চেঞ্জ মেকার ফোরাম কীভাবে নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করবে-সে বিষয়ে ধারণা দেওয়া হচ্ছে।
‘আমরাই পারি’ বিশ্বের ১৫টি দেশে পরিচালিত একটি গ্লোবাল ক্যাম্পেইন। বাংলাদেশে ২০০৪ সাল থেকে ৫৫টি জেলায় কাজ শুরু সংস্থাটি।
পরবর্তীতে ২০১১ সাল থেকে স্বতন্ত্রভাবে দেশে পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধে মানুষের মানসিকতা ও আচরণ পরিবর্তনে জন্য কাজ করে আসছে ‘আমরাই পারি’।
বর্তমানে সংস্থাটির প্রায় ১০ লাখ পরিবর্তনকামী বা চেঞ্জমেকার রয়েছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৫
এমএ/