ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভ্যাট ফাঁকি

পালালেন ‘ভর্তা ভাত’ মালিক-ম্যানেজার

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
পালালেন ‘ভর্তা ভাত’ মালিক-ম্যানেজার ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ভর্তা ভাত রেস্টুরেন্ট-১। সুসজ্জিত, মনোরম পরিবেশ।

দৈনিক বিক্রয় ৭০-৮০ হাজার টাকা। নিয়মানুযায়ী ভোক্তা থেকে ভ্যাট (মূসক) নিয়ে রশিদ দেওয়া হয় এখানে। ব্যবহার করা হয় ইসিআর। তবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে এই রেস্টুরেন্ট থেকে কোনো ভ্যাট জমা পড়ে না।
 
আরিফ ফরহাদ নামে এক ভোক্তার অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার (২৯ নভেম্বর) এই রেস্টুরেন্টে অভিযান চালান মূসক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর কর্মকর্তারা। কর্মকর্তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান রেস্টুরেন্টটির মালিক ও ম্যানেজার। অতঃপর জব্দ করা হয় কম্পিউটার, রেজিস্ট্রার। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
 
মূসক গোয়েন্দা অধিদফতরের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। একই দিন একই অভিযোগে নিউমার্কেটের পার্বন রেস্টুরেন্টেও অভিযান পরিচালিত হয়।
 
সূত্র জানায়, ২৯ নভেম্বর ‘ভ্যাট ইন্টেলিজেন্স’ ও ‘কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা-নর্থ’ ফেসবুক পেজে আরিফ ফরহাদ অভিযোগ করেন।
 
অভিযোগে তিনি বলেন, শনিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজারে ভর্তা ভাত রেস্তোঁরায় খাওয়ার পর ২৮০ টাকার বিল ধরিয়ে দিল। যাতে কোনো ভ্যাট নম্বর নেই।

তার মতো আরও অন্তত ১২ জনকে ওই সময় বিল দেওয়া হয়। তবে কাউকে মূসক চালান দেওয়া হলো না। ভ্যাট নম্বর নিয়ে প্রশ্ন করতেই ক্ষেপে ওঠেন ম্যানেজার।
 
সূত্র আরো জানায়, অভিযানে কর্মকর্তারা দেখেন, ভাতভর্তায় দৈনিক গড়ে ৭০-৮০ হাজার টাকার বিক্রি হয়। নিয়মানুযায়ী ভ্যাট নিলেও তা জমা দেয় না কর্তৃপক্ষ।
 
চলতি বছরের আগস্ট মাসে ভ্যাট বিভাগ (তেজগাঁও) এ রেস্টুরেন্টকে বাধ্যতামূলক মূসক নিবন্ধন দেয়। অক্টোবর মাসে এর মালিক মাত্র ছয় হাজার টাকার ভ্যাট জমা দিয়েছেন।
 
সূত্র জানায়, নিয়মানুযায়ী ভোক্তা থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট নিয়ে মাস শেষে সে হিসেবে ভ্যাট দেওয়ার কথা থাকলেও রেস্টুরেন্ট মালিক ফিক্সড ভ্যাট দেন। এটি ভ্যাট আইনের পরিপন্থী।
 
অভিযানে কর্মকর্তারা ভর্তা ভাতের রেকর্ডপত্র জব্দ করেন। তবে জব্দ তালিকা মূসক-৫ নিতেও রেস্টুরেন্টের কারোর দেখা পাননি কর্মকর্তারা।
 
ভ্যাট ইন্টেলিজেন্স ও কাস্টমস’র (ঢাকা-উত্তর) দু’টি ফেসবুক পেজে দৈনিক অসংখ্য অভিযোগ করেন ভোক্তারা। সে অনুযায়ী অভিযানও পরিচালিত হচ্ছে।
 
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে ভোক্তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে গুলশান, বনানীসহ অভিজাত এলাকার বিভিন্ন রেস্টুরেন্টসহ নামিদামি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় এই দুই প্রতিষ্ঠান। এসব অভিযানে ভ্যাট ফাঁকির চাঞ্চল্যকর তথ্য আবিষ্কারসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। ফলে এসব এলাকার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এখন নিয়মিত ভ্যাট দিচ্ছে।
 
অভিযোগের ভিত্তিতে সব এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন মূসক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. বেলাল হোসাইন চৌধুরী।
 
তিনি বলেন, ভ্যাট আদায় করে তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। কোনো ভোক্তা আমাদের কাছে অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমাদের উদ্দেশ্য কাউকে শাস্তি দেওয়া নয়, সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা। কারণ ভোক্তারা সচেতন হলে কেউ ভ্যাট ফাঁকি দিতে পারবে না।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৪৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
আরইউ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।