নারায়ণগঞ্জ থেকে: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় একটি মামলায় চাকরিচ্যুত র্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদ সহ ১৩ জনের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (৩০ নভেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন এর আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন।
এর আগে,সাত খুনের ঘটনায় নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার ও তার গাড়ি চালক ইব্রাহিম হত্যার মামলায় ওই জামিন আবেদন করা হয়। একই আদালত জামিন নামঞ্জুর করে এ মামলায় আগামী ১১ জানুয়ারি চার্জ গঠনের দিন ধার্য্য করেন।
এদিকে, সকালে সাত খুনের ঘটনায় প্রধান আসামি নূর হোসেন সহ র্যাবের চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, এম এম রানা, আরিফ হোসেনসহ ২৩ আসামিকে কঠোর নিরাপত্তায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়। সাত খুনের ঘটনায় নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটির করা মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয় অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্ত’র আদালতে। ওই আদালতে শুনানি শেষে মামলাটি বিচার কার্য্যক্রমের জন্য জেলা জজ কোর্টে প্রেরণ করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের এপিপি ফজলুর রহমান বলেন, জজ কোর্টে মামলা প্রেরণের পর আগামী ১১ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য্য করেছেন আদালত। এর আগে, চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যা মামলাটি গত ৯ নভেম্বর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট হতে জজ কোর্টে প্রেরণ করা হয়। আগামী ১১ জানুয়ারি চার্জ গঠন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, চন্দন সরকার হত্যা মামলায় তারেক সাঈদ সহ ১৩ জনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের কঠোর আপত্তির কারণে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন।
আদালতে ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ছরোয়ার মিয়ার নেতৃত্বে ৫ জনের একটি আইনজীবী দল তারেক সাঈদের পক্ষে ওই জামিন আবেদন করেন। ছরোয়ার মিয়া জানান, খুন, গুম ও অপহরণের সঙ্গে তারেক সাঈদ জড়িত না। তিনি ওই সময়ে র্যাবের ক্যাম্প কমান্ডার থাকায় তাকে দোষারোপ করা হয়েছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান অভিযোগ করেন, নূর হোসেনের পক্ষে সরকার দলীয় আইনজীবীরা কাজ করছে। কোর্টে পিপিকে যেভাবে মামলা পরিচালনা করতে দেখা গেছে তাতে মনে হয়েছে তিনি ‘ম্যানেজ’ হয়ে গেছেন।
এদিকে সকাল পৌনে ১০টায় নূর হোসেনকে কঠোর নিরাপত্তায় আদালতে আনা হয়। তবে এর আগে থেকেই নূর হোসেনের পক্ষে তার লোকজন আদালতে উপস্থিত হয়ে তার পক্ষে স্লোগান দেয়। নূর হোসেনকে আদালতে আনার পর ও নেওয়ার সময় তাকে বেশ হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দুটি মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মামনুর রশিদ।
এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে অব্যাহতির সুপারিশ করায় নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি গত ১১ মে নারাজি আবেদন করেন। গত ৯ নভেম্বর নারাজি আবেদন খারিজ হয়। পরে তিনি হাইকোর্টে অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ নভেম্বর ৩০,২০১৫
আরআই