ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের দাবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৫
পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের দাবি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা প্রসঙ্গে পাকিস্তান যে মিথ্যাচারপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে তা প্রত্যাপহার না করলে পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (০৩ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানান বক্তারা।



সকালে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘একাত্তরের গণহত্যা নিয়ে পাকিস্তানের নির্লজ্জ মিথ্যাচার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নেতা খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, পাকিস্তান ’৭১-এর গণহত্যা নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছে তা এখনও প্রত্যাহার করেনি। পাকিস্তান যদি তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার না করে, দেশটি যদি একই অবস্থানে থাকে তাহলে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি হলে তার দায়দায়িত্ব পাকিস্তানকেই নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সময় দেওয়া বক্তব্যে ও বইয়ে, হামদুর রহমান কমিশনের রিপোর্টে গণহত্যার কথা উঠে এসেছে। পাকিস্তান এমন একটি দেশ এই দেশটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তান নিয়ে কথা বলতে আমার লজ্জা হয়। পাকিস্তানের মিথ্যাচারে আমি অবাক হয়নি। আমি অবাক হয়েছি, ক্ষুব্ধ হয়েছি যারা এদেশের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ছিলো, আমাদের বিপক্ষ দল, যারা নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের দল দাবি করে সেই বিএনপির পক্ষ্য থেকে পাকিস্তানের বক্তব্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়নি। আমার ক্ষোভ এই জায়গায়। পাকিস্তান যেমন স্বীকার করে না গণহত্যা হয়েছে তেমনি বিএনপিও স্বীকার করে না গণহত্যা হয়েছে।

আলোচনা সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, এখন সময় এসেছে পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সরকারের কূটনৈতিক সম্পর্কসহ সব সম্পর্ক ছিন্ন করার। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে পাকিস্তানকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো উচিত। সার্ক (দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা) থেকে পাকিস্তানকে বাদ দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের পণ্য বর্জনের আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা অবিলম্বে পাকিস্তানের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, তা না হলে এই দাবিতে ঢাকায় অবস্থিত পাকিস্তানের দূতাবাস ঘেরাও করা হবে।

সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, পাকিস্তানের ১৫৭ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর বিচারের যে অঙ্গীকার পাকিস্তান করেছিলো তা বাস্তবায়ন করতে হবে। সিমলা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে।

ওয়াল্ড ইউনিভার্সিটির ভিসি ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানের এজেন্ট যারা বাংলাদেশে আছে তাদের রক্ষা করার জন্য পাকিস্তান মরণ কামড় দিতে পারে। বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য পাকিস্তানের দূতাবাস ঘেরাও করতে হবে। পাকিস্তানের পণ্য কেউ কিনবেন না, পাকিস্তানের পণ্য বর্জন করতে হবে।

কবি রবীন্দ্র গোপ বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নতুন প্রজন্ম আবার মাঠে নেমেছে। আমরা পিছ পা হবো না।

আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিন আকতারুজ্জামান বলেন, হামদুর রহমান কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে। পাকিস্তানের সঙ্গে কূনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানাই। পাকিস্তানকে সার্ক থেকে বাদ দিতে হবে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, অধ্যক্ষ শাজাহার আলম সাজু, আওয়ামী লীগ নেতা শাহে আলম মুরাদ, বলরাম পোদ্দার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নেতা অরুণ সরকার রানা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৫
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।