ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের টিএ রোডে জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার ছাত্র ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে মোবাইল ফোন কেনা নিয়ে তর্কের জের ধরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে পুরো শহর।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের জেলা পরিষদ মার্কেটের এক দোকান থেকে এক মাদ্রাসা ছাত্রের মোবাইল কেনা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রথমে ব্যবসায়ী ও মাদ্রাসা ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এসময় মুহুর্মুহু ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে।
পরে ছাত্রলীগ কর্মীরা মাদ্রাসা ছাত্রদের ধাওয়া করলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ চলাকালে শহরের টিএ রোড, কান্দিপাড়া মাদ্রাসা রোড রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। অাতঙ্কে লোকজন দিগ্বিদিক ছুটোছুটি শুরু করে। এ সময় মাদ্রাসা রোডের অন্তত ৮/১০টি বন্ধ থাকা দোকান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অানতে শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জনেরও বেশি অাহত হয়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (রাত ৮টা) পুলিশ কান্দিপাড়া এলাকার একদিকে অবস্থান নিয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা অপরদিকে দূরে অবস্থান নিয়ে রাস্তার কয়েক জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছে। অন্যদিকে, মাঝামাঝি সড়কে অবস্থান নিয়ে আছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে, কান্দিপাড়া এলাকায় সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহে গেলে বাংলানিউজের প্রতিনিধি মাসুক হৃদয় ককটেল হামলায় অাহত হন। একটি ককটেল তার বাম হাতে আঘাত হেনে কিছু দূরে বিস্ফোরিত হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এএসপি তাপস রঞ্জন বোস বাংলানিউজকে বলেন, মাদ্রাসা ছাত্রদের বাড়াবাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, স্থানীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি নাসিরনগর উপজেলায় জঙ্গি কার্যক্রমের অভিযোগে ধনকোড়া গ্রামের একটি মসজিদ ও মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে মাদ্রাসা ও মসজিদ খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
সন্ধ্যায় মোবাইল ফোন কেনা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের বিরোধে দেখা দিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। এতে তারাও ছাত্রলীগকে পাল্টা ধাওয়া করে। শুরু হয় তুমুল সংঘর্ষ। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
জানতে চাইলে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহামেদ বলেন, এখানে কোনো মাদ্রাসা নেই। এলাকায় লোকসংখ্যাও তেমন বেশি নয়। আর মসজিদে তালা দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৫/আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা
এসআর