ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আতঙ্কের নাম ‘ফুটব্রিজ’

রফিকুল আলম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
আতঙ্কের নাম ‘ফুটব্রিজ’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ধুনট (বগুড়া): বেশকিছু জায়গায় খঁসে পড়েছে পলেস্তারা, ইট-সিমেন্ট ক্ষয় হয়ে বের হয়ে পড়েছে রড। মাদকসেবীদের থাবায় দুই পাশের লোহার তৈরি রেলিং উধাও।

নড়বড়ে পিলারের ওপর ফুটো হওয়া টপস্ল্যাব। দেখে মনে হয় এই বুঝি ইট-সুরকি খঁসে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে পুরো ব্রিজটা।

ফলে এখন ব্রিজ ব্যবহার নিরাপদ মনে করেন না পথচারীরা। স্থানীয়দের কাছে এই ব্রিজটি এখন শুধুই ‘আতঙ্ক’। তবে বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই এই ফুটব্রিজ দিয়ে চলাচল করছে মানুষ।

বগুড়ার ধুনট উপজেলার হাসাপোটল-সোনামুয়াহাট মেঠোপথের পশ্চিম কান্তনগর গ্রামে যেতে সোনামুয়া খালের ওপরের এ ফুটব্রিজের এখন এমনই ভগ্নদশা।

স্থানীয়রা জানান, কালেরপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ অংশে গ্রামীণ ওই পথ দিয়ে আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষের যাতায়াত। এছাড়া মৌসুমী খাদ্যশস্য ও কৃষিপণ্য পরিবহনের কাজেও এই পথ বহুল ব্যবহৃত।

বর্ষার সময় সোনামুয়া খালের ওপর স্থানীয়দের উদ্যোগে তৈরিকৃত বাঁশের সাঁকো দিয়ে মানুষ ও মালামাল পারাপার করা হতো। তবে শুকনো মৌসুমে হাঁটু পানি ভেঙে পারাপার করা হতো।

গুরুত্বপূর্ণ এ পথ দিয়ে পারাপারের দুর্ঘব লাঘবে ১৯৮৪-৮৫ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে প্রায় ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের সোনামুয়া খালের ওপর ওই ফুটব্রিজটি নির্মাণ করা হয়।

ঢালাই করা টপস্ল্যাবের সঙ্গে লোহার পাইপ দিয়ে তৈরি হয় ব্রিজের দুই পাশের রেলিং। নির্মাণের কিছুদিন পরেই মাদকের টাকা জোগাড় করতে রাতের আঁধারে ব্রিজের রেলিং কেটে নিয়ে গেছে মাদকসেবীরা।
   
পশ্চিম কান্তনগর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী জানান, ব্রিজের টপস্ল্যাবের কয়েক স্থানে ঢালাই ভেঙে পড়ে রড বের হয়ে পড়েছে। ব্রিজের ফুটো হওয়া স্থানগুলো কাঠের গুঁড়ি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এখন ব্রিজের ওপর দিয়ে যাতায়াতের সময় ব্রিজটি থরথর করে কাঁপে।

কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জীবনের শঙ্কা নিয়েই পারাপার হতে হয় স্থানীয় মানুষ ও পথচারীদের।

উপজেলার হাসাপোটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক চয়নিকা সাথী জানান, অনেক দিন আগেই ব্রিজটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কেন পুনঃনির্মাণ করা হচ্ছে না তা জানা নেই। এ ব্রিজ দিয়ে সাধারণ মানুষ ও শিশু শিক্ষার্থীরা নিরুপায় হয়ে চলাচল করছেন।

উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী জানান, তিনি সোনামুয়া খালের ওপর নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের জন্য উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বার বার প্রস্তাব করেছেন। কিন্ত আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই ব্রিজটি এলাকাবাসীর কাছে এখন আতঙ্কের প্রতীক।

এ বিষয়ে এলজিইডির ধুনট উপজেলা প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সোনামুয়া খালের ওপর আরসিসি ব্রিজ নির্মাণের প্রাক্কলন তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে নতুন করে টেকসই ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬ 
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।