লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের আদিতমারীতে ক্ষুরা রোগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ গরুর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার ৭টি গ্রামে ক্ষুরা রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
গ্রামগুলো হলো- আদিতমারী উপজেলার বড় কমলাবাড়ি, ময়নার চওড়া, দুর্গাপুর শঠিবাড়ি, মহিষখোচা, মহিষাশ্বহর, নামুড়ি ও দৌলজোর। রোগটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়েছে বড় কমলাবাড়ি গ্রামে।
সোমবার(১১ জানুয়ারি) বড় কমলাবাড়ি গ্রামের সুভাশ চন্দ্রের ৪টি গরুর মধ্যে ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩টি মারা গেছে। অপরটির অবস্থাও আশঙ্কাজনক। একইদিনে তার পাশের বাড়ির আরতী বালার ৬টির মধ্যে ৩টি গরু মারা যায়। বাকি গরুগুলোর অবস্থাও বেশ খারাপ।
নীল কান্তের ৩টির মধ্যে ২টিই মারা গেছে। কনক চন্দ্রের ৮টি গরুর সবগুলোই আক্রান্ত হয়েছে। এমনভাবে পুরো গ্রামেই ছড়িয়ে পড়েছে এ রোগ।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ১৫দিন আগে বড় কলাবাড়ি গ্রামের ধীরেন্দ্র নাথ বম্মার একটি গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এরপর একে একে ওই গ্রামের সবার গরুই এ রোগে আক্রান্ত হয়। একমাত্র সম্বল গরুগুলোকে বাঁচাতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে ফোন করে ডাকলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ওই গ্রামেই প্রায় ২০টি গরু মারা গেছে জানালেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
বড় কমলাবাড়ি গ্রামের কৃষাণী আরতী রানী বাংলানিউজকে জানান, তার একমাত্র সম্বল ৬টি গরুর মধ্যে ৩টি মারা গেছে। বাকি ৩টিকে বাঁচাতে চড়া সুদে ঋণ নিয়েছেন। কারণ, স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক মন্টু প্রতিদিন একটি করে ইনজেকশন দিয়ে তিনশত করে টাকা নেন। কিন্তু তার দেওয়া ওষুধে কাজ হচ্ছে না।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে জানাননি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে আরতী বলেন, হাসপাতালের বড় ডাক্তারকে ডাকিয়াও(ডেকে) পাওয়া যায় না। এর আগে একবার আসছিল তার ভিজিট দিতে হয় ৩শত টাকা। হামরা গরীব মানুষ গরুর ভিজিট দেওয়ার টাকা কোনটে পাই।
আদিতমারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মামুন উর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, বড় কমলাবাড়িতে ক্ষুরা রোগে কিছু গরু আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী পল্লী চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিচ্ছেন। এটা ভাইরাস জনিত রোগ, সেরে উঠতে একটু সময় লাগবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৬
পিসি/