নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে বসতবাড়িতে ঢুকে দুই শিশু ও নারীসহ একই পরিবারের পাঁচজনকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন বাবুরাইল এলাকার একটি বাসার নিচতলা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বাসার ঠিকানা- ২নং বাবুরাইল, বাসা নং ১৩১/১১; যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের বাড়ি। বাড়িটি স্থানীয় খানকাহ শরীফের পাশে। গতবছর (২০১৫ সাল) নভেম্বরে এ বাড়িতে ভাড়া আসেন তারা।
নিহত তাসলিমার মা মোরশেদা বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল (১৫ জানুয়ারি-শুক্রবার) রাতে ছেলে মোরশেদুলের সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনটি ছিল বন্ধ।
তিনি জানান, লামিয়ার স্বামী শরীফ কিশোরগঞ্জ থেকে শনিবার সন্ধ্যায় ওই বাসায় আসেন। তিনি এসে দরজা নক করেন। কিন্তু কেউ খোলে না। কিছু সময় অপেক্ষার পর রাতে বাড়ির মালিকের চাচাতো ভাই হাজি মোহাম্মদ হোসেনের সহযোগিতায় দরজা ভেঙে মরদেহ দেখতে পান। অবশেষে খবর দেন- স্থানীয়দের এবং পুলিশকে।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেসটিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. এহসানউদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এ খুনের ঘটনা ঠাণ্ডা মাথায় হয়েছে।
সুদের টাকা সংক্রান্ত কারণে হত্যাগুলো হতে পারে, বলেন পুলিশের একাধিক সদস্য।
নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ফোরকান শিকদার বাংলানিউজকে বলেন, খবর পেয়েই তিনিসহ র্যাব ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। তারা আলামত সংগ্রহ করেছেন। বিস্তারিত পরে জানানো যাবে।
এদিকে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত তাসলিমার ননদ হাজেরা বেগম নিহতদের নাম, পরিচয় ও সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার হাজি ওবায়েদুল্লাহ জানান, ঘটনাটি কখন ঘটেছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাবুরাইলের যে বাড়িতে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তার মালিক ইসমাইল হোসেন আমেরিকা প্রবাসী। তাসলিমার পরিবার ছয়তলা বাড়িটির নিচ তলার ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। তাসলিমার স্বামীর নাম শফিক, তিনি রাজধানী ঢাকায় গাড়ি চালানোর কাজ করেন বলে জানান তাসলিমার খালাতো ভাই দেলোয়ার। খরব পেয়ে তিনি ছুটে আসেন।
আলামত সংগ্রহ ও সুরতহাল
এদিকে গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ এবং সুরতহাল করেছে পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেসটিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) একটি ক্রাইম সিন টিম। এ দলে নেতৃত্ব দেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবদুস সালাম। তারা আলামত সংগ্রহের কাজ করেন।
আটক দুইজন
এ ঘটনায় দু’জনকে রাত আনুমানিক ১১টার দিকে আটক করা হয়। নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানান, দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তারা পরিবারের সদস্য। তার মধ্যে একজন নিহত তাসলিমার খালাতো ভাই দেলোয়ার। অন্যদিকে, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত তাসলিমার মা মোরশেদাকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়।
এছাড়া ভোর রাত ৪টার দিকে পাঁচ খুনের ঘটনায় নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা শহরের ভিক্টোরিয়া ১০০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৬/আপডেট ২২৩৬, ০৭০৬
আরআই/আইএ
** কয়েকজন মিলে এসে হত্যা করে যান
** না’গঞ্জে র্যাব মহাপরিচালকের পরিদর্শন সকালে
** ‘খুনিরা পেশাদার নন, ঘটনা ডাকাতিও নয়’
** না’গঞ্জের ওই বাড়িতে সিআইডি টিম, আটক ২