ঢাকা: ‘আজকে আমার বোন হারায়েছে, কালকে আপনাদের বোন হারাবে। জেব্রা ক্রসিংয়ের পাশে কোনো সাইনবোর্ড নাই, ড্রাইভার কিভাবে বুঝবে? জেব্রা ক্রসিংয়ে যদি কেউ মারা যায় তাহলে অন্য জায়গায় কী হবে? একটা পুলিশ নাই, একটা ট্রাফিক নাই’
রোববার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সোনালীর ভাই সাজ্জাদ হোসেন সৈকত।
শুধু সৈকত কিংবা তার পরিবারই নয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে উপস্থিত সাংবাদিক, পথচারী, সহপাঠিসহ মানববন্ধনের সবাই তখন কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
কান্না জড়িত কণ্ঠে সৈকত বলতে থাকেন, আপনারা প্রয়োজনে একদিনের মধ্যে সংবিধান পরিবর্তন করেন, আপনারা মানুষের বিচারের জন্য আইন পরিবর্তন করতে পারেন না।
কাঁদতে কাঁদতে একপর্যায়ে কথা হারিয়ে ফেলেন সৈকত। কিন্তু এ কান্নার শেষ কোথায়?
সোনালিকে হারিয়ে শোকে পাথর রং মিস্ত্রী বাবা জাকির হোসেন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার সোনার টুকরোকে কেড়ে নিয়েছে, মেয়ে হারিয়ে আমার কলিজা ছিদ্র হয়ে গেছে। সোনালি যদি মন্ত্রী-এমপির মেয়ে হত তাহলে নিশ্চই এতক্ষণে ঘাতক ড্রাইভার গ্রেফতার হত। কিন্তু আমি অসহায় রং মিস্ত্রি হওয়ায় আমার মেয়ের হত্যাকারী চালককে ধরতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।
শোকে মূহ্যমান এই বাবা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আর ধরা পড়লেও তিন মাস ছয় মাসের জেল হয়। এই হত্যাকারীদের ফাঁসি না হোক, অন্তত যাবজ্জীবন চাই। মেয়ে হত্যার বিচার না পেলে আমিও ঘাতক ড্রাইভার সাজতে প্রস্তুত আছি।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে মৎস ভবনের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সাবিহা আক্তার সোনালী রহিমা বেগম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জুনিয়র শিক্ষা সমাপনীতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। দুর্ঘটনার দিন সোনালী তেজগাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যাচ্ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ০২০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৬
এইচআর/এসএইচ