ঢাকা: দুই পা এবং একহাতে শক্তি পাচ্ছেন না, দু’দিন পর অপারেশন। মিট মিট করে তাকাচ্ছেন, আগন্তক সহকর্মী-শুভাকাঙ্খীদের সঙ্গে কথা বলছেন, তাদের ভালোবাসায় ছলছল দু’চোখ।
হাসপাতালের বিছানায় চিকিৎসাধীন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি আলতাফ মাহমুদের শরীরিক সমস্যা বাড়ছে দিন দিন। তার দু’চোখের জল কাঁদাচ্ছে সহকর্মী-স্বজনদেরও।
এই মুহূর্তে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করালে স্বস্তি পাবেন তারা। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টির অপেক্ষা তাদের।
বিশিষ্ট সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের চিকিৎসা চলছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ৩১১ নম্বর কেবিনে।
তার স্বজনরা জানান, গত ১৪ জানুয়ারি স্পাইনাল কডের সমস্যা, মাথার পেছনে ও ঘাড়ে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন আলতাফ মাহমুদ। প্রথমে এক পায়ে শক্তি না পেলেও এখন দুই পায়েই শক্তি পাচ্ছেন না, বাম হাতটিরও একই অবস্থা।
হাসপাতের চিকিৎসক নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক কণক কান্তি বড়ুয়ার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আলতাফ মাহমুদ। তার চিকিৎসায় একটি মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) অপারেশনের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় আলতাফ মাহমুদের স্ত্রী তাহমিনা মাহমুদের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, দিন দিন সমস্যাটা বাড়ছে। চিকিৎসকদের প্রতি আস্থা রয়েছে। কিন্তু দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করানোটাই ভালো হতো।
স্বজনেরা বলেন, এই মুহূর্তে কিডনিতেও কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
‘এখন ভরসা পাচ্ছি না। কারণ, সমস্যা বাড়ছে। এখানকার চিকিৎসা ভালো। কিন্তু দু’দিনের মধ্যে বাইরে নিতে না পারলে হয়তো সুযোগটা হারাবো’- বলেন তার স্ত্রী।
সিংগাপুর বা চেন্নাইয়ে এসব রোগের চিকিৎসা ভালো বলে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন তারা। একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই পারেন তার চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে- বলেন আলতাফ মাহমুদের স্ত্রী ও শ্যালক।
বিশিষ্ট এই সাংবাদিক নেতাকে দেখতে বিকেলে হাসপাতালে এসেছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি চিকিৎসকদের সুচিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করাবেন বলে স্বজনদের আশ্বস্ত করেছেন।
ছোট্ট ছোট্ট করে বাংলানিউজের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন আলতাফ মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘নাসিম ভাই বলেছেন, দরকার হলে বিদেশে পাঠাবো। দেখেন, কী করা যায়...। আমার ইচ্ছার ওপর তো আর সব নির্ভর করে না। ঢাকায় চিকিৎসা করার মতোও...। ’
আলতাফ মাহমুদের শ্যালক মাসুদ বলেন, প্রতিদিন চিকিৎসার জন্য ১৫/২০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। নিজেরাই এ ব্যয় মেটাচ্ছেন। খরচ চালাতেও হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
বিলম্ব না করে দ্রুত দেশের বাইরে নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিলে ভালো হয় বলে মনে করে আলতাফ মাহমুদের স্ত্রী তাহমিনা মাহমুদ বলেন, ‘এখন প্রধানমন্ত্রীর পক্ষেই সম্ভব...’।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৬
এমআইএইচ/এএসআর