জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: বিরোধীদল জাতীয় পার্টির (জাপা) চলমান বিরোধ নিষ্পত্তিতে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বারস্থ হতে হলো বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদকে। এ সময় তাদের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে জাতীয় পার্টির এমপিদের প্রত্যাহার করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সংসদে মাগরিবের বিরতির সময় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেখা করেন রওশন এরশাদ। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাপা নেতা ও পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম, বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বৈঠক হয়েছে বলে জানা যায়। এর আগে, সংসদ অধিবেশন কক্ষে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদপন্থি মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে বিরোধীদলীয় নেতা শাসিয়েছেন বলে জানা যায়।
বিরোধীদলীয় নেতা রুহুল আমিন হাওলাদারকে বলেন, তুমি বেশি বেড়ে গেছো। তোমার সাহস বেশি হয়ে গেছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে বিরোধীদলীয় নেতার কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করছেন রওশন এরশাদ।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, জি এম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবং রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব করায় জাতীয় পার্টির মধ্যে বিরাজমান বিরোধ নিয়েই কথা বলেন রওশন এরশাদ। এই সংকট মোকাবেলায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন বলে বাংলানিউজকে জানান মিটিংয়ে অংশ নেওয়া এক সদস্য।
বৈঠক প্রসঙ্গে রওশন এরশাদ সাংবাদিকদের বলেন, ময়মনসিংহের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। তার সঙ্গে এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তিনি উন্নয়নমূলক সব কাজে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
মন্ত্রিসভা ও দলের সংকট নিয়ে কোনো আলাচনা হয়েছে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, না, এসব নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। জাতীয় পার্টিতে কোনো সংকট নেই বলেও দাবি করেন রওশন।
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, এসব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেন যাবো!
একই বিষয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বৈঠকের জন্য সময় আগেই পাওয়া গিয়েছিল। সে কারণে বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠকটি হয়েছে। তবে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে তা এখনও জানি না। বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
এদিকে দলের শীর্ষ এক নেতা বলেন, আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল মন্ত্রিসভা থেকে জাতীয় পার্টির এমপিদের পদত্যাগ নিয়ে। ওই বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা সম্প্রতি দলের মধ্যে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। একই সঙ্গে দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের মনোভাব ও তার ভূমিকার ব্যাখা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি আগেই জানিয়েছিলেন দলের সদ্য নিয়োগ পাওয়া কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের। গত ২ জানুয়ারি তিনি এক প্রেস কনফারেন্সে বলেন, বিশেষ দূতের পদ ও মন্ত্রিসভা ছাড়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ ও সংসদের বিরোধীদলের নেতা রওশন এরশাদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চাওয়া হয়েছে।
ওই দিন তিনি জানিয়েছিলেন, মন্ত্রিসভা ছাড়ার বিষয়ে এরশাদ এবং রওশন একমত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এখন আলোচনার পর জাতীয় পার্টিতে কী নতুন পরিবর্তন দেখা দেয় তাই দেখার বিষয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘন্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৬/আপডেট ২২১০
এসএম/আইএ