রাজশাহী: নতুন প্রজন্মের কাছে আবহমান বাংলার পিঠাকে পরিচিত করে ঐতিহ্যময় গ্রামীণ সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে রাজশাহীর পদ্মাপাড়ে এবার আয়োজন করা হয়েছে ব্যতিক্রমী পিঠা পুলি উৎসব।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় ভিড় করছেন ভোজনরসিকরা।
রাজশাহী মহানগরীর পদ্মাপাড়ের রিভারভিউ ফুড কর্নারটির চারপাশ এখন নানান স্বাদের পিঠার সুগন্ধে মৌ মৌ করছে। বর্ণিল ভঙিমায় থরে থরে সাজিয়ে রাখা পিঠাগুলো যেন ছুঁয়ে যাচ্ছে দর্শণার্থীদের মন-প্রাণ। জিভের আগায় তার স্বাদ না নেওয়া পর্যন্ত যেন রসনাপূর্তি হচ্ছে না অনেকের।
বাবা-মায়ের সঙ্গে পিঠা উৎসবে যাওয়া মৌমিতা জাহান নামে এক স্কুল ছাত্রী জানালেন, একসঙ্গে এতো পিঠার আয়োজন সে আগে কখনও দেখেনি। স্বাদের অনুভূতিটাও ভিন্নমাত্রার তার কাছে।
সরকারি চাকরিজীবী মোজাম্মেল হক বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পিঠা পুলির পরিচয় করিয়ে দিতে এমন আয়োজনের জুড়ি নেই। কারণ ইচ্ছে থাকলেও বাড়ির গৃহিণী আর সময়ের অভাবে আগের মতো পিঠা তৈরির সুযোগ পায় না। ফলে আজকালের ছেলে-মেয়েরা এসব পিঠার স্বাদ নেওয়া তো দূরে থাক অনেক পিঠার নাম পর্যন্ত জানতে পারে না।
গৃহিণী আফরোজা রহমান জানান, পদ্মাপাড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে পিঠার উৎসব সত্যিই ব্যতিক্রম। প্রাকৃতিক পরিবেশে পিঠা খাওয়া যেন অন্যরকম স্বাদ এনে দিচ্ছে।
আয়োজকদের ধন্যবাদ দিয়ে তাই প্রতি বছরই এমন আয়োজন থাকা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, পিঠা মেলা ঘুরে দেখা যায়, পানখিলি, পাটিসাপটা, গোলাপ, নকশি, রসচিতই, কুশলি, হৃদয় হরণ, লবঙ্গ লতিকা, মাছ পিঠা, বিস্কুট পিঠা, নারকেলের শাঁস কুশলি, দুধকুশলি, সবজির চাকা পিঠা, বিবিখানা, মুখশেলী, কালাই পিঠা, লেয়ার পিঠা, বকুল পিঠা, পাকোয়ান, ভাঁপা পিঠাসহ নানা ধরনের পিঠার আয়োজন করা হয়েছে।
রাজশাহী ডিস্ট্রিক্ট উইমেন বিজনেস ফোরাম দু’দিনব্যাপী এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে মেলার উদ্বোধন করা হয়। শেষ হবে শুক্রবার রাতে।
রাজশাহী ডিস্ট্রিক্ট উইমেন বিজনেস ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক রেজেটি নাজনীন জানান, পিঠামেলায় হেঁসেল, কুঠুরি, রস, ফারহানার রান্নাঘর, নয়নতারা, হাসিন বুটিকসহ ১০টি স্টল স্থান পেয়েছে। যেখানে রয়েছে ৫০ থেকে ৬০ রকমের পিঠা।
আরও যেসব পিঠা এ মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কলসি পিঠা, লেয়ার পিঠা, মুগ পাকন, বৌপিঠা, ছাচাপিঠা, ডিমচোরা, বোম্বাই পিঠা, পাতা পিঠা, চুটকি পিঠা, দুধপুলি, ফুল পিঠা, মুসুর পিঠা, কড়ি পিঠা, কালাইরস মালাই, গুড়ের শাহী পিঠা, আলুর প্যান কেক পিঠা। নানান রঙের ও বর্ণের এবং নানান স্বাদের পিঠা মুগ্ধ করছে দর্শনার্থীদের।
রেজেটি নাজনীল আরও বলেন, মেলায় এবার পিঠা প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়েছে। তাই মেলায় সৃষ্টিশীলতা ও আয়োজনের ব্যাপকতা বেড়েছে আগের চেয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৬
এসএস/এএ