রাজশাহী: বছরজুড়ে বইপড়া কর্মসূচিতে নিজের উৎকর্ষতার পরিচয় দেওয়ায় রাজশাহী মহানগরীর ৮৬২ জন বইপাগল শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করেছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও গ্রামীণফোন।
শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ পুরস্কার বিতরণী উৎসবের উদ্বোধন করেন।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র পরিচালিত দেশভিত্তিক উৎকর্ষ কার্যক্রমের আওতায় ২০১৫ সালে রাজশাহী মহানগরীর ৩৪টি স্কুলের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। মূল্যায়ন পর্বে যারা কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে তাদেরকে, পুরস্কার প্রদানের জন্য গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় এ পুরস্কার বিতরণী উৎসবের আয়োজন করা হয়।
উৎসবে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক, রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মুনির হোসেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র নাটোর শাখার সংগঠক ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক অলোক মৈত্র, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ মকবুল হোসেন, রাজশাহী মহানগর শাখার সংগঠক সোমা আহমেদ, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শরীফ মো. মাসুদ ও গ্রামীণফোন রাজশাহীর হেড অব রিজিওনাল ইমতিয়াজ আহমেদ।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ডেপুটি টিম লিডার (প্রোগ্রাম) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘বই মানুষের হৃদয়কে সুন্দর করে, আলোকিত করে ও জীবনকে সমৃদ্ধ করে। আর সমৃদ্ধ হৃদয়ের মানুষরাই পারে একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠন করতে। তোমরা বই পড়ে হৃদয়কে সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে দেশকে উন্নত করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা’।
তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা বই পড়, বই পড়লে তোমাদের হৃদয় সুন্দর হবে, তোমরাও ভালো হবে। তোমরা ভালো হলে বাংলাদেশ ভালো হবে। বাংলাদেশ বড় হবে’।
কথা সহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক বলেন, ‘মেয়েরা অনেক এগিয়ে যাচ্ছে, এটা সম্ভব হয়েছে বইপড়ে ও স্বপ্ন দেখে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র তোমাদেরকে সেই স্বপ্ন দেখাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মনকে পরিস্কার করতে। বিকশিত মানুষ হতে পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিখ্যাত মানুষদের লেখা বিভিন্ন বই পড়ার জন্য তিনি ছাত্রছাত্রীদের আহবান জানান’।
এসময় বিখ্যাত মানুষের লেখার মধ্যেই সুন্দর সুন্দর স্বপ্নের কথা লেখা থাকে উল্লেখ করে ইন্টারনেটের চেয়ে বইয়ের প্রতি আরও বেশি আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য ছাত্রছাত্রীদের উদ্বুদ্ধ করেন তিনি।
গ্রামীণফোনের হেড অব রিজিওনাল ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, একঝাঁক মেধাবী জ্ঞান-পিপাসুকে স্বীকৃতি দিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পেরে গ্রামীণফোন আনন্দিত ও গর্বিত। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র তার কর্মসূচি নিয়ে দেশের প্রায় সবপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।
আর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের এ যাত্রায় গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সঙ্গী হিসেবে রয়েছে গ্রামীণফোন। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র রাজশাহী মহানগরীর বইপড়া কর্মসূচির এ পুরস্কার বিতরণী উৎসবে ৩৪টি স্কুলের ৮৬২ জন শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার দেওয়া হয়।
তাদের মধ্যে স্বাগত পুরস্কার পেয়েছে ৫৯৯ জন, শুভেচ্ছা পুরস্কার পেয়েছে ২০৫ জন, অভিনন্দন পুরস্কার পেয়েছে ৪১ জন এবং সেরা পাঠক পুরস্কার পেয়েছে ১৭ জন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৬
এসএস/জেডএস