ঢাকা: শুধু রাজাকার, আল বদর, আল শামস নয়, পাকিস্তানের যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় যাদুঘরে বাংলাদেশ সেক্টরস মুক্তিযোদ্ধা ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আত্মসমর্পণ দলিলে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক সেদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং বিহারীদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও পাকিস্তান সরকার তা করেনি। এর মানে হল শুধু রাজাকার, আল বদর, আল শামস নয়, পাকিস্তানের যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং অচিরেই তা করা হবে।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আজ অন্য ধরনের কথা বলছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে অন্তত বিশ বার ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ নির্যাতিত মা বোনের কথা স্বীকার করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্যদের সম্মাননা জানাবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রমের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্যাপ্টেন শচীন কর্মকার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির, গবেষক ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, ভারতীয় হাইকমিশনের ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জে এস নন্দা প্রমুখ।
শাহরিয়ার কবির বলেন, পাকিস্তানপন্থিরা অনেক সময় বলার চেষ্টা করে হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের সময় ভারতীয় বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে আসতে দেয়নি। কিন্তু বাস্তবতা হল উনি প্রটোকলের বিষয়ে অধিক সচেতন থাকায় পাকিস্তান বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডের আত্মসমর্পণে না থেকে সমপর্যায়ের মুক্তিযুদ্ধের উপ-সেনাপতি এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকারকে পাঠান।
তিনি এসময় প্রশাসনকে জামায়াতমুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকুরির বয়সসীমা ৬৫ বছর বাড়ানোর দাবি জানান। একইসঙ্গে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, জেনারেল জগজিত সিং অরোরা এবং জেনারেল জ্যাকবের নামে বাংলাদেশে সড়কের নামকরণের দাবি তোলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হাসান পাখী ও মোহাম্মদ আলী শিকদার।
সভায় জেনারেল জ্যাকবের নামে একটি সড়কের নামকরণ ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয় সেনাদের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৬
এইচআর/এইচএ/