ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শ্রমিককে মারধরের অভিযোগ, পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট অবরুদ্ধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৬
শ্রমিককে মারধরের অভিযোগ, পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট অবরুদ্ধ

নাটোর: নাটোরে মহাসড়কে যানবাহনে তল্লাশি চলাকালে হাইওয়ে পুলিশ এক ট্রাক চালককে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  

আহত ট্রাক চালককে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।



রোববার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে শহরতলী দত্তপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও এলাকাবাসী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে এবং মহাসড়ক অবরোধ করে।

এ সময় মোস্তফা বাবুল নামে এক হাইওয়ে পুলিশ সদস্যের উপর চড়াও হয় বিক্ষুব্ধরা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অবরোধে মহাসড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে প্রশাসন ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে চালকরা অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

প্রশাসনের দাবি ট্রাকে তল্লাশির কথা বললে ওই ট্রাক চালক নির্দেশ অমান্য করে ট্রাক না থামিয়ে তাদের চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে দ্রুত বেগে চলে যাচ্ছিলো। তাই তাকে আটক করা হয়।

তবে পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, রোববার বিকেলে নাটোর-ঢাকা মহাসড়কের দত্তপাড়া এলাকায় নিয়মিত তল্লাশি চালাচ্ছিল হাইওয়ে পুলিশ। এ সময় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া বাফার গোডাউন থেকে সার বোঝাই একটি ট্রাক হাইওয়ে পুলিশের তাড়া খেয়ে পালানোর চেষ্টা করে।

একই সময় দত্তপাড়া ব্রিজের পূর্বপাশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মৌসুমি বাইন হিরার নেতৃত্বে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছিলো। এতে বিভিন্ন গাড়ির কাগজপত্র, ফিটনেস যাচাই বাছাই করা হচ্ছিলো। দ্রুত গতির ওই ট্রাক চালক সেখানে এসে ট্রাক থামালে হাইওয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে ওই ট্রাকের দরজায় আঘাত করে গ্লাস ভেঙে দেয়। চালক তার প্রতিবাদ করলে পুলিশ ওই ট্রাক চালক হাফিজুল ইসলামকে ট্রাক থেকে নামিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়। এতে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও পরিবহন শ্রমিকরা একত্রিত হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে ওই পুলিশ সদস্যের শাস্তি দাবি করেন।

কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালতের কর্মকর্তা নিরব থাকায় উত্তেজিত এলাকাবাসী ও শ্রমিকরা হাইওয়ে পুলিশ সদস্য মোস্তফা বাবুলের উপর চড়াও হয়। পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ঊঠলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হীরাসহ অন্যরা একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বিক্ষুব্ধরা তাদেরও অবরুদ্ধ করে রাখে।

এছাড়া চালকরা মহাসড়কে যত্রতত্র গাড়ি রেখে অবরোধ করে। খবর পেয়ে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুনশী শাহাবুদ্দিন অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষুব্ধদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ সময় মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

পরে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আতিয়ুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে চালকরা অবরোধ তুলে নেয়।

বিক্ষুব্ধ চালক ও শ্রমিকরা জানায়, হাইওয়ে পুলিশ তল্লাশির নামে নিয়মিত মহাসড়কে চাঁদাবাজী করে আসছে।

এ ব্যাপারে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুনশী সাহাবুদ্দিন বলেন, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক পরে তদন্ত করে কারণ উদঘাটন শেষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হাইওয়ে পুলিশের কোনো দোষ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আতিয়ুর রহমান বলেন, বিচারের আশ্বাসে এক ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেওয়ায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।