ঢাকা: সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) সকালেই রাজধানীবাসীকে তীব্র যানজটের মুখোমুখি হতে হয়।
সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলিতেও যানবাহনের দীর্ঘলাইন দেখা গেছে।
এতে চরম বিপাকে পড়েছেন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থী এবং কর্মস্থলমুখী মানুষরা।
সকাল থেকে রাজধানীর মিরপুর, রামপুরা, মালিবাগ, নতুন বাজার, ফার্মগেট, মগবাজার, বাড্ডা, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ছিল যানবাহনের দীর্ঘ লাইন।
এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েকে নিয়ে মা রাশেদা জামান সকাল সাড়ে ৭টায় মিরপুর-১ নম্বরের একটি স্কুলের উদ্দেশে আগারগাঁওয়ের বাসা থেকে বের হয়েছেন।
কিন্তু বাস স্টপেজে প্রায় একঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো বাসে উঠতে পারেননি মা-মেয়ে। বাধ্য হয়েছে চড়েছেন রিকশায়, কিন্তু যানজটে তো রিকশাও চলে না।
ফের রিকশা থেকে নেমে কিছু রাস্তা হেঁটে একটি বাসে উঠেছেন। কিন্তু যানজটের কারণে বেশ কয়েকটি পরিবহন পাল্টিয়েছেন করছেন তারা।
এ অবস্থা শুধু রাশেদা জামান আর কার মেয়েরই নয়, রাজধানীর প্রায় সব পরীক্ষার্থী-অভিভাবকের।
সোমবার সকাল ১০টায় এসএসসি-সমামানের পরীক্ষায় বসেছেন সাড়ে ১৬ লাখ শিক্ষার্থী। ছেলে-মেয়েকে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পরীক্ষা হলে পৌঁছে দিতে উদগ্রীব ছিলেন অভিভাবকরা।
রাজধানীর মালিবাগ মোড় থেকে বাংলানিউজের সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট মান্নান মারুফ জানান, সকাল ৮টা থেকে শান্তিনগর মোড়, মালিবাগ, হাতিরঝিল সংলগ্ন সড়কে যানজট তীব্র ছিল। তবে ৯টার পর থেকে বাড্ডা লিংক রোড থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত তা বিস্তৃত হয়।
‘তবে ১০টার পর থেকে রামপুর থেকে বাড্ডা, শাহজাদপুর, নতুন বাজার সড়কে থেমে থাকা গাড়িগুলো ধীরগতিকে চলতে শুরু করে,’ বলে জানিয়েছেন স্টাফ ফটো করেসপন্ডেন্ট দীপু মালাকার।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট রহমত উল্লাহ জানিয়েছেন, মোহাম্মদপুর থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা গেট পযর্ন্ত আসতে তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে। আসাদ গেট, বিজয় সরণি, মহাখালী, গুলশান ও বাড্ডা লিংক রোডেও ছিল প্রচুর থেমে থাকা গাড়ি।
এছাড়া সকালে শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, বনানী ও কাকলী রোডে ধীরগতিতে বাস চলেছে। তবে কাকলীর পর তেমন যানজট ছিল না বলে জানিয়েছেন সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ইলিয়াস সরকার।
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মহিউদ্দিন মাহমুদ জানান, সকালে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে শত শত মানুষকে পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কিন্তু গণপরিবহনের অপ্রতুলতার কারণে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে দেরি হয় তাদের।
তিনি জানান, মাঝে মাঝে দুই-একটি পরিবহন এলেও সেখানে তিলধারণের ঠাঁই ছিল না। এরপরও অনেককে ঝুলে ঝুলে যেতেও দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের খেলা হওয়ায় পাশের সড়কের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে আরও দুর্ভোগ বাড়ে যাত্রীদের।
ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের (দক্ষিণ বিভাগ) উপ-কমিশনার খান মো. রেজওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, এসএসসি-সমামানের পরীক্ষা হওয়ার কারণে সকালে নগরীতে যানজট তীব্র ছিল। কিন্তু ১০টায় পরীক্ষা শুরু হলে তা কমে যায়।
‘পরীক্ষা শেষে ফের যানজট বাড়তে পারে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা কাজ করছি,’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৬
এমআইএস/এমএ