ঢাকা: প্রিয় মাতৃভূমিকে মুক্ত করতে ত্রিশ লাখ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছেন, সেটি ঐতিহাসিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। এ ৩০ লাখ শহীদ নিয়ে কোনো ধরনের বির্তকের কোনোই অবকাশ নেই বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) নেত্রকোনার রাজাকার কমান্ডার মো. ওবায়দুল হক তাহের ও তার সহযোগী রাজাকার আতাউর রহমান ননীর মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায়ে এ পর্যবেক্ষণ দেন ট্রাইব্যুনাল।
২৬৮ পৃষ্ঠার রায়ে তাহের ও ননীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার-উল হকের নেতৃত্বে বিচারিক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, দেশান্তরিতকরণ, বাড়িঘরে আগুন ও লুটপাটের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে চারটি প্রমাণিত হওয়ায় সর্বোচ্চ এ সাজা দেওয়া হয়েছে।
রায়ের ২৫২ পৃষ্ঠার ৪৪৬ অনুচ্ছেদে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর কাছ থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে বাঙালি জাতি ও মুক্তিযোদ্ধারা নয় মাস ধরে যে যুদ্ধ করেছে, তা ঐতিহাসিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। প্রিয় মাতৃভূমিকে মুক্ত করতে ত্রিশ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন, লাখ লাখ নারী তার সর্বোচ্চ সম্মান বিসর্জন দিয়েছেন, প্রায় এক কোটি মানুষ ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন, লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস নিঃসন্দেহে জাতির পবিত্র আবেগ ও মুক্তিযুদ্ধের অহঙ্কারের সঙ্গে মিশে আছে’।
তাহের-ননীর রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, ‘ইতোমধ্যে ৩০ লাখ শহীদের বিষয়ে যে বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে এ রায় প্রদান করার মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনাল যে বিষয়ে সে যুক্তিখণ্ডন করেছেন। ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, ৩০ লাখ শহীদ নিয়ে কোনো ধরনের বির্তকের কোনোই অবকাশ নেই। এবং এ ত্রিশ লাখ মানুষের আত্মদানের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীন বাংলাদেশ তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে এ রায়ের মধ্যে দিয়ে। শহীদ পরিবার এবং ভিকটিম পরিবার, তাদের যে সন্তুষ্টির এবং আকুতির বিষয় রায় প্রদানের মাধ্যমে প্রতিফলন ঘটিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল’।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬
ইএস/এএসআর
** চলতি মেয়াদেই রূপকল্প-২০৪০
** তাহের-ননীর ফাঁসি অথবা ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড