ঢাকা: কর অফিসে এসে ফাইল খোঁজা। এরপর লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে রশিদ ফের কর অফিসে জমা দেয়া।
এ সব কিছুর দিন শেষ হচ্ছে জুলাই মাসে! আগামী জুলাই থেকে কর দিতে কোন করদাতাকে কর অফিসে আসতে হবে না। ঘরে বসেই কর সংক্রান্ত সব সেবা পাবেন করদাতা, এমনকি প্রত্যয়নপত্রও!
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর বিভাগের স্ট্রেনদেনিং গর্ভমেন্স ম্যানেজমেন্ট প্রোজেক্ট (এসজিএমপি) প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন হচ্ছে এই প্রকল্প। শুধু করদাতাকে সেবা প্রদানই নয়, এ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশব্যাপী মাঠ পর্যায়ের ৬৪৯টি আয়কর সার্কেল অফিসও মূল সার্ভারের ডিজিটাল সংযোগে যুক্ত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) এনবিআর সম্মেলন কক্ষে ‘কম্পিউটার সামগ্রী প্রদান ও ইন্সটলেশন’ অনুষ্ঠানে প্রকল্প পরিচালক ও এনবিআর সদস্য কালিপদ হাওলাদার বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান।
করবিভাগকে পূর্ণাঙ্গ, স্বয়ংসম্পূর্ণ, আধুনিক, শক্তিশালী, জবাবদিহিতা ও প্রযুক্তি নির্ভর বিভাগ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রকল্পটি নিয়েছে এনবিআর। এনবিআরকে সম্পূর্ণ অটোমেশনের আওতায় আনতে প্রকল্পটি সহায়তা করবে বলেও জানান এনবিআর সদস্য কালিপদ হাওলাদার।
তিনি জানান, কম্পিউটার কাউন্সিলে মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। সেখান থেকে ডাটাবেজ মনিটরিং করা হবে। আমরা জুন থেকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত, জুলাই থেকে কাজ শুরু হবে। এর ফলে এখন থেকে অনলাইনেই যে কেউ আয়কর রিটার্ন (আয়কর বিবরণী) পূরণ ও দাখিল করতে পারবেন। ঘরে বসেই পাবেন আয়কর রিটার্ন ও প্রাপ্তি স্বীকারপত্র। এছাড়া ই-পেমেন্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে যে কেউ অনলাইনে কর প্রদান করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ব্যাংক, চালান বা ক্যাশের মাধ্যমে জমা দিয়ে নম্বরটি অনলাইনে দিয়ে দিতে হবে।
এ ব্যাপারে সব ব্যাংকের সাথে চুক্তি হয়েছে উল্লেখ করে যে কোন করদাতা যে কোন ব্যাংকের অনলাইনে একাউন্ট থেকে কর দিতে পারবেন বলেও জানান তিনি। এছাড়া চাইলে যেকোন করদাতা আগের পদ্ধতিতেও কর অফিসের সব সেবা পাবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এই প্রকল্পের আওতায় কর বিভাগের মাঠ পর্যায়ের অফিসসমূহ নেটওয়ার্কিংয়ের আওতায় আসবে এবং আপিল, কর অবকাশসহ বিবিধ কার্যক্রমের অটোমেশন হবে। এর মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের অফিসসমূহ একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং এর আওতায় আসবে। এ প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আয়কর প্রদানে গতিশীলতা আসবে বলেও জানান হাওলাদার।
এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কর বিভাগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাও বৃদ্ধি পাবে বলে উল্লেখ করেন কালিপদ হাওলাদার। বর্তমানে করদাতা কর সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য জানতে সাধারণত কর অফিস, আইনজীবীর শরণাপন্ন হন। কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে করদাতারা সহজেই অনলাইনে কর সংক্রান্ত সব তথ্য জানতে পারবেন। করসংক্রান্ত সব ফরম, নির্দেশিকা, কর আইন, কর্মকর্তার যাবতীয় তথ্য অনলাইনে থাকবে। করদাতারা চাইলে কর কমিশনারদের সাথেও যোগাযোগ করতে পারবেন।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আর্থিক সহায়তায় ভিয়েতনামভিত্তিক আইটি প্রতিষ্ঠান এফপিটি ইনফরমেশন সিস্টেম কর্পোরেশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫১ কোটি টাকা। অর্থায়ন করবে বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ডিসেম্বরে প্রকল্প মেয়াদ শেষ হলেও ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রকল্পটি এফপিটি’র তত্ত্বাবধানে থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬
আরইউ/