রাজশাহী: সিরাজগঞ্জে হরতাল চলাকালে বেইলি ব্রিজ ভাঙাসহ নাশকতার মামলায় খোকশাবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রশিবির সভাপতিসহ ১৫ জনকে যাবজ্জীবন ও ১৩ জনের পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালত।
একই সঙ্গে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক গোলাম আহমেদ খলিলুর রহমান এ আদেশ দেন।
মামলার বিবরণীর অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর আসামিরা নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সিরাজগঞ্জ থানার ফকিরতলা এলাকার সরকারি বেইলি ব্রিজে ৩টি পাটাতন উপড়ে ফেলে। এতে জন সাধারণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। সেই সঙ্গে পরপর কয়েকটি ককটেল ও হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় ওই দিনই সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন।
এজাহারে ৪০ জন আসামি থাকলেও ২০১৪ সালের ৩ জুন মামলার চার্জশিটে ৬০ জনকে আসামি করা হয়। ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) রায় প্রকাশের দিনে ৩৫জন আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আসামিরা হলো- সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার চক ব্রক্ষণগাঁতী গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে মিজানুর রহমান, খলিশাকুড়া গ্রামের মালেক মওলানার ছেলে কাইউম মুন্নি, খলিশাকুড়া খিচুড়ি পাড়া গ্রামের মৃত শমসের আলীর ছেলে মোকলেসুর রহমান, আনোয়ার হোসেনের ছেলে রিয়াজ হাসান রাজু, চন্দ্রকোণা গ্রামের গোলাম কাদেরের ছেলে চাঁন মিয়া শেখ, আবুল কামলামের ছেলে শাহ আলম, চর ছনগাছা গ্রামের শহিদের ছেলে সুমন, সুলাইমান শেখের ছেলে হামিদ, ঘোড়াচড়া এলাকার আজিজুল সরকারের ছেলে মোমিন, আমলা পাড়া এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে আবু সাইদ সুইট, নতুন ভাঙা বাড়ি দক্ষিণপাড়া এলাকার আমির হোসেনের ছেলে সবুজ, জারিলা পোড়াবাড়ি এলাকার সুজাবদ আলীর ছেলে আনিসুর রহমান, পূর্ব মোহনপুর এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে আব্দুল আলিম ওরফে ডাকাত আলিম, আব্দুল করিমের ছেলে বাবু ওরফে ডাকাত বাবু, ধানবান্ধি জেসি রোড এলাকার নুরুল ইসলমের ছেলে মোতালেব ওপফে তালেব।
এছাড়া যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হামিদ রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলো।
এদিকে, ১৩ জনকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৩ মাস সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এরা হলেন- শিলন্দা এলাকার মোসলেমের ছেলে শফি, হোসেনপুর বউ বাজার এলাকার গুটু শেখের ছেলে হাকু, আমলা পাড়া এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে আলমগীর আলম ওরফে প্যাটেল আলম, দৌলতপুর খোকশাবাড়ি এলাকার মৃত রাকিব উদ্দিন শেখের ছেলে জুড়ান আলী, একডালা শহর এলাকার জয়েন উদ্দিন ভূইয়ার ছেলে লুৎফর ভূইয়া, পুরাতন শৈলাবাড়ি এলাকার মৃত আজাহার আলীর ছেলে বাবুল শেখ, হাট সারটিয়া এলাকায় আজাহার মোল্লার ছেলে সানোয়ার হোসেন, গাছাবাড়ি এলাকার মৃত মানিক চাঁদের ছেলে আলেক চাঁদ, বাঐতারা এলাকার হাসেম সরকারের ছেলে ইসমাইল হোসেন, খোকসাবাড়ি হাটখোলা এলাকার মৃত ইসমাইলের ছেলে মোস্তাকিম, নুরুল ইসলামের ছেলে আলমগীর হোসেন, ধানবান্দি জেসি রোড এলাকার জুলমত শেখের ছেলে জিয়া হাসান ওরফে জন ওরফে জনি, আবুল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান পাপ্পু।
রায় ঘোষণার সময় পাপ্পু, জনি ও ইসমাইল হোসেন ছাড়া আসামিদের সবাই উপস্থিত ছিলো।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬/আপডেটেড ২১১০
এসএস/এসএইচ