ঢাকা: ভোটের রাজনীতিতে দিন দিন শূন্যের কোটায় চলে যাচ্ছে বাম দলগুলো। এমনকি অনেক ধর্মভিত্তিক ছোট ছোট রাজনৈতিক দলও এদের চেয়ে বেশি ভোট টানছে।
২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সারাদেশের পৌরসভা নির্বাচনে বাম দলগুলো সম্মিলিতভাবে ১ শতাংশ ভোটও পায়নি।
মাঠ পর্যায় থেকে সংগ্রহ করা ফলাফলের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৈরি করা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
ইসি’র প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ২২৮ পৌরসভা নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলো সংখ্যা ৬৯ লাখ ৪ হাজার ২৩১ জন। তাদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৫০ লাখ ৫২ হাজার ১৬০ জন। এর মধ্যে বাতিল হয়ে ৯১ হাজার ৬০৭টি ভোট, যা প্রদত্ত ভোটের ১ দশমিক ৮১ শতাংশ। অবশিষ্ট ভোট অর্থাৎ ৪৯ লাখ ৬০ হাজার ৫৫৩টি ভোট পেয়েছেন ২০টি দল ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা।
এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এবং স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা মিলে পেয়েছেন ৪৮ লাখ ৭৯ হাজার ৬৪২ ভোট। যা প্রদত্ত ভোটের ৯৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ ভোট। বাতিল হয়েছে ১ দশমিক ৮১ ভোট। অবশিষ্ট ১ দশমিক ৬১ শতাংশ ভোট পেয়েছে ১৭টি দল। এক্ষেত্রে বাম দলগুলো ১ শতাংশ ভোটেরও কম পেয়েছে।
এর মধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) পেয়েছে ১ হাজার ২৬৭ ভোট, যা প্রদত্ত ভোটের শূন্য দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি পেয়েছে ১ হাজার ৮৩৫ ভোট অর্থাৎ শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ১৫ হাজার ২৯৫ ভোট অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৩ শূন্য শতাংশ ভোট পেয়েছে।
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল ২৯২টি অর্থাৎ শূন্য দশমিক শূন্য শূন্য শতাংশ ভোট পেয়েছে। বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি পেয়েছে ৪০৫টি অর্থাৎ শূন্য দশমিক শূন্য শূন্য শতাংশ ভোট।
এছাড়া অন্য ১২টি দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এ দলটি ৪৭ হাজার ৪৬টি অর্থাৎ শূন্য দশমিক নয় তিন শতাংশ ভোট পেয়েছে। আবার খেলাফত মজলিশ ২ হাজার ৯৪টি অর্থাৎ শূন্য দশমিক শূন্য চার শতাংশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ১ হাজার ৫১৭ টি অর্থাৎ শূন্য দশমিক শূন্য তিন শতাংশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ ৫৬০ ভোট অর্থাৎ শূন্য দশমিক শূন্য এক শতাংশ, ইসলামী ঐক্যজোট ২ হাজার ৫৬৪ ভোট অর্থাৎ শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল ৪৯টি অর্থাৎ শূন্য শতাংশ ভোট পেয়েছে।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) পেয়েছে ১ হাজার ৯২১ ভোট, যা প্রদত্ত ভোটের শূন্য দশমিক শূন্য তিন শতাংশ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন পেয়েছে ১৯৯ ভোট অর্থাৎ শূন্য শতাংশ, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ ১৪৫টি ভোট অর্থাৎ শূন্য শতাংশ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ৫৩৮ ভোট অর্থাৎ শূন্য দশমিক শূন্য এক শতাংশ, জাতীয় পর্টি-জেপি ২ হাজার ৪১৪ ভোট অর্থাৎ শূন্য দশমিক শূন্য চার শতাংশ এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) পেয়েছে ২ হাজার ৭৭৯টি অর্থাৎ শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ ভোট।
ইসি’র উপ-সচিব মো. সামসুল আলম বাংলানিউজকে জানান, পৌর নির্বাচনে ২০টি দল প্রার্থী দেয়। এতে মেয়র পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ৯৪৫ জন। তাদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ২৮৫ জন।
দলগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ৮ জন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির ১ জন, জেপির ৬ জন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ৪ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ১ জন, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের ১ জন ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের ছিলেন ১ জন প্রার্থী।
এছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের ৪ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ২১ জন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) ১ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১৭ জন, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) ১ জন, ইসলামী ঐক্যজোটের ১ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৫৭ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ৩ জন, বাংলাদেশর বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ১ জন ও খেলাফত মজলিশের ১ জন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
আর আওয়ামী লীগের ২৩৪ জন, বিএনপির ২২৩ জন এবং জাতীয় পার্টির ৭৪ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগের কম পাওয়ায় ৫ শতাধিক মেয়র প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
নির্বাচনে ২২৮ পৌরসভার মধ্যে ১৭৭টিতে আওয়ামী লীগ, ২৩টিতে বিএনপি, ১৮টিতে বিদ্রোহী এবং ১০টিতে স্বতন্ত্র ও অন্যান্য মিলে মেয়র পদে জয়লাভ করেছে। এছাড়াও ৭ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬
ইইউডি/এএসআর
** আ’লীগ ৫২.২৯, বিএনপি ২৮.১৬ ও জাপা ১.৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে