ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি (বিজেএমএএস) পুরোপুরি একটি মানবাধিকার সংস্থা। এর কোনো ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম নেই।
মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁওয়ে সংস্থাটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিজেএমএএস’র সভাপতি অ্যাডেভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ এসব অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, অনেক বছর ধরে শিশু ও নারীদের নিয়ে কাজ করছে বিজেএমএএস। এখন সময় হয়েছে বলার যে, আমাদের বিপক্ষে কাজ হচ্ছে।
ফাওজিয়া করিম বলেন, বিজেএমএএস পুরোপুরি একটি হিউম্যান রাইটস অরগানাইজেশন। আমরা কোনো মাইক্রোক্রেডিট করি না। টাকা দেই না, রেশন, পোল্ট্রি, গরু-ছাগল দেই না বা কৃষি নিয়েও কোনো রকম কার্যক্রম নেই। আমাদের কোনো প্রজেক্টেই ক্ষুদ্রঋণ নেই। আমাদের যেসব প্রজেক্ট রয়েছে প্রত্যেকটি প্রজেক্টের জন্য এনজিও ব্যুরো থেকে অনুমোদন নিয়েছি। কোনো অননুমোদিত কার্যক্রম আমরা করি না।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বিজেএমএএস নারী ও শিশুদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করছে। মানবাধিকার এ সংগঠনটি অলাভজনক ও অরাজনৈতিক সংস্থা। এটি মহিলা আইনজীবীদের পেশাগত মানোন্নয়ন এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নারী ও শিশুদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে কাজ করে। সমিতির মূল উদ্দেশ্য নারী ও শিশুদের অধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। একটি প্রগতিশীল সংগঠন হিসেবে সমিতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, নারী-পুরুষ সমতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে এবং সে অনুযায়ী যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে।
ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, বিজেএমএএস কোনো ক্ষুদ্রঋণ বা কোনো ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে না। সম্প্রতি কিছু স্বার্থান্বেষী ও অসাধু ব্যক্তি নিজেদের অর্থনৈতিক লাভের জন্য অনৈতিক ও অবৈধ পন্থায় বিজেএমএএস’র পুরনো প্যাড এবং সমিতির নকল সিল ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বিষয়টি জানা মাত্র বিজেএমএএস ২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর দু’টি পত্রিকায় সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
তিনি বলেন, অসাধু ব্যক্তিদেরর সঙ্গে কেউ কোনো ধরনের লেনদেন করলে সমিতি তার কোনো দায়-দায়িত্ব বহন করবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া একই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করা হয়। যার নম্বর ১৩৬৮। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় বর্তমানে কিছুসংখ্যক স্বার্থান্বেষী মহল অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে সমিতির সংশ্লিষ্টতা উল্লেখ করে সমিতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে। এর ফলে জনমনে সমিতির কার্যক্রম সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে যা সমিতির সুনামের জন্য হানিকর। উল্লেখিত অপপ্রচার ও মিথ্যা অভিযোগগুলো সমিতির জন্য মর্যাদা ক্ষুন্নকর এবং এ সমস্ত বিষয়ে বিজেএমএএস’র কোনো সদস্য বা কর্মকর্তা দায়ী নয়।
প্রয়োজনে যারা অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সমিতি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য থাকবে বলেও জানান ফাওজিয়া করিম ফিরোজ।
সম্প্রতি সমিতির নির্বাহী পরিচালক সালমা আলীকে জড়িয়ে অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত মামলা দায়ের হলে তা বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফলাও করে প্রচার হয়। এতে বিজেএমএএস’র সুনাম নষ্ট হয়েছে দাবি করেন ফাওজিয়া করিম। তিনি বলেন, এ ধরনের খবর কোনো যাচাই ছাড়া গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মানহানি হয়। এবং কাজের প্রতি তাদের উৎসাহ কমে যায়। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যায়।
লিখিত বক্তব্যে ফাওজিয়া করিম বলেন, কিছু কিছু পত্রিকা সত্যতা যাচাই না করেই অভিযোগ দায়ের সংক্রান্ত মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেছে, যা সম্পূর্ণ মানহানিকর। এ বিষয়ে সমিতি প্রয়োজনে মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে সালমা আলী সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন করেন, মামলায় আরো আসামি ছিলেন। কিন্তু কেন আমার ছবিই শুধু ব্যবহার করা হলো? এছাড়া আমার কমেন্টস কেন নেওয়া হয়নি? মামলা হয়েছে বলেই কি আমাকে হাইলাইট করে কমেন্ট ছাড়াই কোনো নিউজ প্রকাশ করতে হবে?
সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬
ইইউডি/এএসআর