ঢাকা: এখন বাস্তবে কম দেখা গেলেও রজনীকান্ত সেনের ‘স্বাধীনতার সুখ’ ছড়ায় অমর হয়ে আছে শিল্পী পাখি বাবুই। বাবুই আর চড়ুইর গল্প ফেঁদে তিনি সমাজের জন্য যেমন দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ, তেমন নতুন প্রজন্মের কাছে পাখিটিকে রেখেছেন বাঁচিয়ে।
বাসা তৈরির অনন্য দক্ষতা থাকায় তাঁতী পাখি হিসেবেও বেশ খ্যাতি তার। তাঁতীর কাপড় বোনার মতোই নিখুঁত এদের বাসা তৈরি পদ্ধতি।
চড়ুই প্রজাতির এ পাখিটি বাসা তৈরি করে সাধারণত তাল, খেজুর ও নারিকেল গাছের পাতায়।
বাসা তৈরির প্রধান উপকরণ নলখাগড়া ও হোগলা। প্রকৃতি বিনষ্টে এ উপকরণ সংকট অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে এ পাখিটিকে।
চড়ুই যতই দম্ভোক্তি করুক শিল্পের বড়াই বাবুই করতেই পারে! চিকন ঠোঁটের কারসাজিতে নিখুঁত কারুকাজে সাজিয়ে তোলা যেন কেবল তাদের পক্ষেই সম্ভব!
বাসাগুলো দেখতে হয় মাছের পলো অথবা উল্টানো কলসির মতো। একরঙা ধূসর বর্ণের।
প্রায় প্রতিটি বাসায় প্রবেশপথ থাকে দুটি। ভিতরটা দোতলার মতোও করে অনকে সময়। তবে ডিম পেড়ে একটি পথ বন্ধ করে দেয় তারা।
একটি গাছে দশটি বাসা থাকলেও প্রতিটি দেখতে হয় ভিন্ন। এখানেও যেন নিজেদের শিল্পকর্মকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা তাদের।
বাবুই বাসা তৈরির পর ভিতর ও বাইরের আবরণ এবং প্রবেশ মুখে মসৃণতা আনতে ব্যবহার করে নিজেদের বুককে। বুকের ঘষায় সুন্দর রূপ পায় বাসা।
তাই বাসার প্রতিটি পরতে পরতে মেলে অক্লান্ত পরিশ্রম আ নিখুঁত শিল্পের ছোঁয়া।
বাবুই পাখি দলবেঁধে বাসা করে। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াইও করে সম্মিলিতভাবে।
সাধারণত প্রজনন মৌসুমে পর্যাপ্ত খাবার ও বাসা তৈরি প্রয়োজনীয় উপকরণ কাছাকাছি পাওয়া যাবে এমন স্থানে বাসা বাঁধে বাবুই।
সত্যি রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ে তাদের কষ্ট করতে হয় সীমাহীন। বাসাগুলো পুরোপুরি ঝুলন্ত হওয়ায় ঝড়ের সময় তাদের নেমে আসে ভয়াবহ দুর্যোগ।
অতি ঝড়-বৃষ্টিতে অনেক সময় হারাতে হয় জীবন। তাই তো চড়ুইকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বলতে পারে, ‘কাঁচা হোক তবু ভাই নিজের বাসা/নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা। ’
ছবিগুলো সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের একটি গ্রাম থেকে তোলা।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬
এএ