ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শাহ আলী নগর হাউজিংয়ের মালিকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৬
শাহ আলী নগর হাউজিংয়ের মালিকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ঢাকা: জালিয়াতির মাধ্যমে আড়াই’শ কাঠারও বেশি সরকারি জমি নিজের নামে লিজ নেওয়ায় শাহ আলী নগর হাউজিং এস্টেট এর মালিক এবং জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কর্মচারিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।

মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) রাতে  সমন্বিত জেলা কার্যালয়-ঢাকা-১ এর সহকারী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ রাজধানীর দারুস সালাম থানায় মামলাটি করেন।



মামলার পর বাদি বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলায় আসামি করা হয়েছে মো. শমসের আলী, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অফিস সহকারী মো. নুরুজ্জামান ও মিরপুরের সাবেক সাব রেজিস্ট্রার মোখলেসুর রহমান ঠাকুরকে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইজারা নিয়েছেন-মর্মে ভুয়া কাগজ দেখিয়ে সরকারি জমি আত্মসাৎ করেন। পরে জালিয়াতি ও প্রতারণামূলকভাবে ওই জমি দখল করে প্লট আকারে বিক্রি করেন।

এজাহার থেকে জানা যায়, জালিয়াতির মাধ্যমে আড়াই’শ কাঠারও বেশি সরকারি জমি নিজের নামে লিজ নিয়ে একটি ‘নগর’ গড়ে তোলেন মিরপুরের শমসের আলী। আর সেই নগরের জমিগুলো প্লট আকারে বিক্রি করে হাতিয়ে নেন শত শত কোটি টাকা। তার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কর্মচারী ও সাব রেজিস্ট্রারের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি সিন্ডিকেট।

জানা গেছে, রাজধানীর বিশিল মৌজার খতিয়ান নম্বর -১১৯, ১০৬, ১৬১ ও ২৮৬ এর-৫১,৫২, ৭৬ ও ৮১ নম্বর দাগে ৪ দশমিক ২৬৬৬ একর (২৫৮.৫৮ কাঠা) জমি ১৯৬০ সালে তৎকালীন গৃহায়ণ অধিদপ্তর অধিগ্রহণ করে (এল. এ. কেস নম্বর-১৩ / ১৯৫৯-৬০)। ১৯৮০ সালের ১৮ ডিসেম্বর এ বিষয়ে গেজেট নোটিফিকেশন করে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (জাগৃক)। রাজধানীর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদিত নকশা ও সুপার ইম্পোজ নকশা অনুযায়ী এ সম্পত্তিতে জাগৃকের জমি ও ডুইপ প্রকল্পের বিভিন্ন প্লট রয়েছে। এ সম্পত্তি কাউকে ইজারা কিংবা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
২০০০ সালের ২০ এপ্রিল এ সম্পত্তির ইজারা দলিল (দলিল নম্বর ২১১৭ / ২০০০) করে নেন মিরপুরের বিশিল এলাকার শরাফত আলীর ছেলে শমসের আলী।

দলিলে ৯৯ বছরের জন্য ৪ একর জমির সেলামি দেখানো হয় মাত্র ৬৪ হাজার টাকা। অথচ গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ এ সম্পত্তি লিজ বরাদ্দ দেয়নি। জাগৃকের পক্ষে সংস্থাটির তৎকালীন অফিস সহকারী মো. নুরুজ্জামান ‘দলিল বাহক ’ হিসেবে ওই দলিলে সই করেন। অথচ দলিল সই করার জন্য জাগৃকের পক্ষ থেকে নুরুজ্জামানকে কোনো ক্ষমতাও দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে মিরপুরের ততকালীন সাব-রেজিস্ট্রার মোখলেসুর রহমান ঠাকুর জমির মৌজা মূল্যের চেয়েও কম দেখিয়ে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি করেন। এত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি কোনো ব্যক্তিকে লিজ দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও তিনি অন্যদের যোগসাজশে তা করিয়েছেন। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তিনি নিজ বা অন্যের স্বার্থে বিনা যাচাইয়ে ওই সম্পদ জালিয়াতিতে শমসের আলীকে সহায়তা করেন।

পরবর্তীতে ভুয়া লিজ বরাদ্দপত্র দেখিয়ে নেওয়া ওই সম্পত্তির ওপর ‘শাহ আলী নগর হাউজিং এস্টেট’ সাইনবোর্ড টানিয়ে প্লট বিক্রি করে ওই চক্র। এ সব প্লটের ওপর এখন গড়ে উঠেছে উপ-শহর। অর্ধশত প্লটের ওপর ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। আর এ এলাকা এখন পরিচিত এখন ‘শাহ আলীনগর হাউজিং এস্টেট’ নামে।

বাংলাদেশ সময়: ০২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৬
এডিএ/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।