ঢাকা: বৈধপথে বিদেশ গমনকারীদের চাকরি নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেবে সরকার। পাশাপাশি প্রবাসীদের বাংলাদেশে বসবাসকারি পরিবারের সদস্যদেরও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
সম্প্রতি মানব পাচার প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি বৈধপথে বিদেশে গমনকারীদের চাকরির নিশ্চয়তা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে এ ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়।
এই সুপারিশের পর নীতিমালা অনুযায়ী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় তাদের কার্যক্রম জোরদার করেছে। এ লক্ষে দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে পদক্ষেপ নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার মো. ইফতেখার হায়দার বাংলানিউজকে বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী আমরা প্রবাসীদের চাকরিতে সুবিধা দেওয়ায় তাদের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষে কাজ করছি। ২০১৫ সালকে আমরা অভিবাসী কর্মীদের জন্য উৎসর্গ করেছি। ২০১৬ সালে আমরা প্রবাসীদের অধিকার হিসেবে তাদের চাকরির ব্যবস্থা, অধিকার নিশ্চিত করা এবং নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ব্যাপকভাবে কাজ করবো। আর তাদের পরিবারের অধিকার, নিরাপত্তা এবং সুযোগ সুবিধা দেবো। কারণ প্রবাসীদের এটি অধিকার এবং প্রবাসী কর্মীরা আমাদের বৈদেশিক আয়ের একটি বড় খাত।
গত ১৯ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানব পাচার প্রতিরোধ সংক্রান্ত্র জাতীয় কমিটির বৈঠকে বৈধপথে বিদেশে গমনকারীদের চাকরি পাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে আরো রয়েছে কর্মী হিসেবে প্রবাসী অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মানবপাচার প্রতিরোধ করা, মানবপাচার ঠেকাতে প্রচারণা চালানো, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, আনসার ভিডিপিসহ প্রশিক্ষিত লোকদের বৈধভাবে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এই সিদ্ধান্তের আলোকে প্রবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করে তাদের চাকরির ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়।
জাতীয় কমিটির সিদ্ধান্তে বলা হয়, অবৈধ পথে বিদেশ না গিয়ে বৈধ পথে বিদেশ যাওয়ার জন্য জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। পাচারকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান নিয়ে ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালাতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারণা চালাতে হবে। মোবাইল ফোনে মেসেজের মাধ্যমে মানব পাচারকারীর সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়ে প্রচারণা চালাতে হবে।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মানব পাচার প্রতিরোধে প্রতি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কাউন্টার ট্রাফিকিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ব্যাপকভাবে প্রচারণামূলক কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ট্রানজিট ও গন্তব্য দেশ হিসেবেও বিবেচিত হয়েছে। এই সময়ে বিপুল সংখ্যক নারী ও শিশু বিদেশে পাচার হয়ে সম্ভ্রমহানি, চরম নির্যাতন ও মৃত্যুর শিকার হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৬
এসএমএ/জেডএম