ঢাকা: বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি ব্লাড ব্যাংক ও দুই হাসপাতালকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাব-২ এর ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ৬ জনকে আটক করেন র্যাব সদস্যরা।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, নিউ বাংলাদেশ প্যাথলজি অ্যান্ড ব্লাড ব্যাংক, নাজ-ই-নুর হাসপাতাল (প্রা.) লি. এবং বারী-ইলিজার্ভ অর্থোপেডিক সেন্টার।
আটককৃতরা হলেন, মো. বশির আলম (৩২), রিপন মন্ডল (২৪), মো. হাফিজুল হক (৫০), মো. যায়ান ব্রিভান বারী (২৭), মো. রাজন (২৬) ও সাদেকুর রহমান (২৩)।
বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হয়।
র্যাব-২ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তাদের দোষী সাব্যস্ত করে নিউ বাংলাদেশ প্যাথললি অ্যান্ড ব্লাড ব্যাংকের সাথে সংশ্লিষ্ট ০২ জনকে ২ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড, নার্স ই নুর হাসপাতাল (প্রা.) লিমিটেড সংশ্লিষ্ট একজনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের কারাদণ্ড এবং বারী-ইলিজার্ভ অর্থোপেডিক সেন্টারের সাথে সংশ্লিষ্ট ৩ জনকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
তিনি জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে ব্লাড ব্যাংকটি অবৈধভাবে অধিক মুনাফার লোভে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ও মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে আসছে। ব্লাড ব্যাংকটির লাইসেন্স নবায়ন নেই।
ব্লাড ব্যাংকটির ফ্রিজের তাপমাত্রার রিডিং সঠিক নাই, রক্ত সংরক্ষণে নিম্নমানের ফ্রিজের ব্যবহার, সেবার মূল্য তালিকা প্রদর্শিত নাই; ব্লাডের মেয়াদোত্তীর্ণ, রক্ত পরিসঞ্চালনের লাইসেন্স মেয়াদ উত্তীর্ণ, বর্জ্য অপসারণ ব্যবস্থা নেই বলেও জানান ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানের সময় নিউ বাংলাদেশ প্যাথলজি অ্যান্ড ব্লাড ব্যাংকের ম্যানেজার মো. বশির আলম ও টেকনোলোজিস্ট রিপন মন্ডলকে আটক করা হয় বলেও জানান তিনি।
একই এলাকায় নাজ-ই-নুর হাসপাতাল (প্রা.) লিমিটেডে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ম্যানেজার মো. হাফিজুল হককে আটক করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও জানান, এই হাসপাতালটির ব্ল্যাড ব্যাংকে লাইসেন্স বিহীন রক্ত সঞ্চালন করা সহ ব্লাড সংরক্ষণের ফ্রিজের তাপমাত্রা রিডিং সঠিক নেই; রক্ত সংরক্ষনে নিম্নমানের ফ্রিজের ব্যবহার করা হচ্ছে।
অপরদিকে ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডের শংকর প্লাজায় বারী-ইলিজার্ভ অর্থোপেডিক সেন্টারেও দেখা যায় এসব অনিয়ম। হাসপাতালটির ড্রাগের লাইসেন্স নেই; এক্স-রে অপারেটরের কোনো সনদপত্র নেই; ক্লিনিকের লাইসেন্সের মেয়াদ নেই। ১০ বেডের অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও ২২ বেডের হাসপাতাল পরিচালিত হচ্ছে; পর্যাপ্ত ডাক্তার ও নার্স নেই। এ সময় তিনজনকে আটক করা হয় বলেও জানান মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
র্যাব-২ এর উপ-পরিচালক ড. মো. দিদারুল আলম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী’র নেতৃত্বে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. আবুল কালাম ও ডা. মো. আবদুর রব ও র্যাব-২ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন অভিযান পরিচালনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৬
এসজেএ/এমজেএফ/