ঢাকা: ইসলামি শিক্ষার নামে শিশুরা যেন জঙ্গিবাদে না জড়িয়ে পড়ে সেদিকে শিক্ষকদের খেয়াল রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষাসপ্তাহ ২০১৬ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
‘মানসম্মত শিক্ষা, জাতির প্রতিজ্ঞা’- প্রতিপাদ্য নিয়ে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালিত হচ্ছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ।
সকাল সড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন। সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন খালিদ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে অল্প কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হতো। সে পদ্ধতিতে আমরা পরিবর্তন এনেছি। এখন সবাই বোর্ড পরীক্ষা দিচ্ছে। আগে এসএসসিতে প্রথম বোর্ড পরীক্ষা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা ভয় পেতো। এখন আর সে ভয় নেই। পাসের হার ৯৮ ভাগে উন্নীত হয়েছে। এজন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক সবাইকে ধন্যবাদ।
নিরক্ষতামুক্ত দেশ গড়ার পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, একটি একটি জেলা ধরে প্রতিটি জেলা নিরক্ষরতা মুক্ত করার অভিযান আমরা শুরু করেছিলাম। ২০০১ সালে বিএনপি জোট ক্ষমতায় এসে সেই ধারায় বাধা সৃষ্টি করে। ৯৬ সালে নিরক্ষরতার হার ছিলো ৪৫ শতাংশ। পরে ৬৫তে উন্নীত করি। একটি দেশ তো এগিয়ে যাবে। এতো পিছিয়ে যায় কি করে? ২০০৯ এসে আবার কাজ শুরু করেছি।
এসময় স্বাক্ষরতার হার শতভাগে উন্নীত করতে সক্ষম হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা। ।
তিনি বলেন, আমরা বিনামূল্যে বই বিতরণ করছি। বই কিনতে বাবা মায়েদের কষ্ট হতো। এটা তাদের উপর একটি অতিরিক্ত বোঝা ছিলো। তাই আওয়ামী লীগ সরকারই দায়িত্বটা নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালে আমরা জাতীয় শিক্ষানীতি করি। এতে ধর্মীয় শিক্ষাও আমরা বাধ্যতামূলক করেছি। এই প্রথম আমরা একটি শিক্ষানীতি করেছি। আমরা বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট করেছি। সেই ট্রাস্ট থেকে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে সহায়তা করা হয়।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া। স্কুলগুলোকে আমরা ডিজিটালাইজ করছি। যেখানে বিদ্যুৎ নেই সেখানে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে আমরা বিদ্যুৎ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। প্রাথমিকে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
দেশের সব বিদ্যালয়কে ডিজিটালাইজ করা হবে বলেও ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্কুলের শিক্ষার্থীদের খাবারের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন কী একই বিস্কুট খেতে ভালো লাগে? তাদের খাবারেও একটু পরিবর্তন আনা দরকার। প্রত্যেক স্কুলের কমিটি যদি এগিয়ে আসে, স্কুলের বাচ্চাদের খাবার তৈরি করে দেন তাহলে পরিবর্তন আসবে।
তিনি আরও বলেন, যেখানে বিদ্যালয় নেই সেখানে আমরা বিদ্যালয় করে দিয়েছি। তাছাড়া স্কুলগুলোতে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছি। ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট করা হয়েছে। ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীর জন্য তাদের ভাষায় পাঠ্যপুস্তকও করা হয়েছে, যেন তারা তাদের ভাষায় পড়তে পারে।
আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন করবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৬
এমইউএম/এএ
** বেনাপোল ইমিগ্রেশনে জিকা ভাইরাস প্রতিরোধে আগাম সতর্কতা
** ধ্বংসস্তূপের মাঝে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু দেশ গড়ে তুলছিলেন