নীলফামারী: নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিকে বিনামূল্যের বই বিতরণে টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের অভিযোগ, বই বিতরণের নামে চা-মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে প্রায় ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
শিক্ষক নেতা ও বিদ্যালয় প্রধানদের অভিযোগ, উপজেলায় ১৫৮ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিজন প্রধান শিক্ষককের কাছ থেকে ৫০ থেকে ১০০টাকা ও ১৭ কিন্টার গার্টেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা করে চা-মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে আদায় করেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও উত্তর গাড়াগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুল হাসান সহকারী শিক্ষা অফিসারকে দিয়ে প্রতিটি বিদ্যালয় প্রধানদের কাছ থেকে বই দেওয়ার সময় ১০০ থেকে ২ হাজার হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করেছেন।
পুষনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিনামূল্যের বই বিতরণের সময় মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে ৫০টাকা করে নিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
মুশা বটতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহজাহান আলী বলেন, বই নেওয়ার পর যখন স্যার মিষ্টি খাওয়ার কথা বলেছে, তখন আমি ৫০টাকা দিয়েছি।
কেল্লাবাড়ী শিশু নিকেতন কিন্টার গার্টেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্র বাংলানিউজকে বলেন, তিনি বই নেওয়ার সময় প্রথম ধাপে এক হাজার ও দ্বিতীয় ধাপে ৩০০ টাকা দিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো অনেক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, স্যার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ও বহিরাগত বাচ্চাদের দিয়ে বই বিতরণ করে তাদের খাওয়ানোর অজুহাত দেখিয়ে টাকা আদায় করেছেন।
বই বিতরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আফজালুল হকের সঙ্গে কথা বললে তিনি শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুল হাসানের সামনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ২০-৩০ টাকা এবং কিন্টার গার্টেনের জন্য ৫শ থেকে এক হাজার টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষকরা স্বেচ্ছায় চা-মিষ্টি খাওয়ার জন্য টাকা দিয়েছে। তবে আমি স্যারের নির্দেশে নিয়েছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুল হাসান বলেন, বই বিতরণে সময় টাকা নেওয়া ভুল হয়েছে, কিন্তু বিষয়টি আমি জানতাম না। তবে তিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন সংবাদটি প্রকাশ না করার জন্য।
যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দিলিপ কুমার বণিক জানান, বই দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। যদি এরকম ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে টাকা আদায়ের বিষয়টি কেউ তাকে জানায় নি বা অভিযোগও করেন নি বলে জানান জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৬
এসএইচ