সিলেট: সব যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের পাশাপাশি দ্রুত জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে সিলেট গণজাগরণ মঞ্চ। একইসঙ্গে গত তিন বছরে খুন হওয়া লেখক, ব্লগার, প্রকাশক ও গণজাগরণকর্মীদের হত্যাকারীদের বিচার দাবি জানানো হয়েছে।
শুক্রবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) গণজাগরণ মঞ্চের ৩ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে এসব দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।
৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জাগরণ গান ও সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠান পূর্ববর্তী সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রতিবাদে সারাদেশে লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। স্বতঃস্ফূর্ত এ প্রতিবাদই পরবর্তী গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে রুপ নেয়।
এ আন্দোলনের ফলে আইন সংশোধন করে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়। আরো কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকর হয়।
বক্তারা আরও বলেন, একদিকে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যকর হচ্ছে অপরদিকে তখন ধর্মীয় উগ্রাবাদী গোষ্ঠী একের পর এক লেখক, ব্লগার, প্রকাশক ও গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠকদের হত্যা করে যাচ্ছে। সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করলেও এসব হত্যাকাণ্ডের বিচারের ব্যাপারে অনেকটাই উদাসীন। বক্তারা লেখক, ব্লগার, প্রকাশক ও গণজাগরণ কর্মীদের হত্যার বিচার দাবি করেন।
গণজাগরণ মঞ্চ, সিলেটের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু’র স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ব্যরিস্টার মো. আরশ আলী, প্রবীণ রাজনীতিবিদ কর, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ভবতোষ রায় বর্মন রানা, সিলেট প্রেসক্লাব ফাউন্ডেশনের সভাপতি আল আজাদ, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সংগ্রাম সিংহ, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেটের সভাপতি অনুপ কুমার দেব, সহ-সভাপতি খোয়াজ রহিম সবুজ, সাধারণ সম্পাদক ও গণজাগরণ সংগঠক রজতকান্তি গুপ্ত, লেখক ও সাংবাদিক অপূর্ব শর্মা, প্রগতি লেখক সংঘের সাধারণ সম্পাদক মাধব রায়, কবি আবিদ ফয়সাল, উদীচী সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রতন দেব, কবি প্রণবকান্তি দেব, রনেন সরকার রনি, সংস্কৃতিকর্মী ধ্রুব গৌতম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে উদীচী সিলেট, নগরনাট, সিলেট, আংশুমান দত্ত অঞ্জন ও সান্তনু সেন তাপ্পু।
সন্ধ্যায় শহীদ মিনার চত্বর থেকে বের হয় আলোর মিছিল। ২০১৩ পরবর্তী সময়ে খুন হওয়া রাজীব হায়দার, জগৎজ্যোতি তালুকদার, দীপ, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অনন্ত বিজয় দাশ, নিলয় নিল, ফয়সাল আরেফিন দিপনের ছবি নিয়ে আলোর মিছিলটি চাঁদনীঘাটে গিয়ে শেষ হয়।
আলোর মিছিল থেকেও এসব লেখক, ব্লগার, প্রকাশ ও গণজাগরণ সংগঠকদের হত্যা বিচার দাবি করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৬
এনইউ/জেডএস