ঢাকা: বিচার বিভাগে দলীয় লোকের বাইরে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না মন্তব্য করে আইন বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, গত এক যুগে বিচার বিভাগে ৯০ থেকে ১০০ জন বিচারক নিয়োগ পেয়েছেন। কিন্তু যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের প্রতি আনুগত্যশীল ছাড়া অন্য কোন যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগদানের জন্য খুঁজে পাননি প্রধান বিচারপতিরা।
শনিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাইঞ্জে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও কাযর্কারিতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে করণীয়’ শীর্ষক সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সুজনের নির্বাহী সদস্য ড. শাহদীন মালিক।
গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিচারপতি আব্দুল মান্নান, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সুজন নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সুজন সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন প্রমুখ। গোল টেবিল বৈঠকটির সঞ্চালনা করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
ড. শাহদীন মালিক বলেন, অধঃস্তন আদালতের উপর নিয়ন্ত্রণ অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট সুপারিশ করলে আইন মন্ত্রণালয় তা মানে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের মতামত উপেক্ষা করলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকে না, বিচার বিভাগ পৃথকীকরণও হয় না।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতার সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সব সময় সরকারকে জেতাতে ব্যস্ত থাকে। দুদক আছে, কিন্তু তা সরকারি লোকদের দুর্নীতি খুঁজে পায় না। এটাই হল বাস্তবতা। বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বের সঙ্গে সরকার দেশ চালাচ্ছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও পৃথকীকরণ না হলে দেশের উন্নয়ন হবে না, সরকারকে মনে রাখতে হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন না হলে জনগণের কল্যাণও বয়ে আনা যাবে না।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৯৫(২)(গ) ধারাতে বলা আছে যে, কোনো ব্যক্তির আইনের দ্বারা নির্ধারিত যোগ্যতা না থাকলে তিনি বিচারপতি পদে নিয়োগ লাভের জন্য যোগ্য হবেন না। বিচারক নিয়োগের যোগ্যতা যাচাইয়ে একটি কমিটি গঠন করারও সুপারিশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৬
এমআইএইচ/এসএম/আরআই