ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রামেকে কাকের রহস্যজনক মৃত্যু, নড়েচড়ে বসেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৬
রামেকে কাকের রহস্যজনক মৃত্যু, নড়েচড়ে বসেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহী: দূর-দূরান্ত ঘুরে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় কাকগুলো এসে বসে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) বিশালাকার দেবদারু গাছের ডালপালায়। গাছটির ডালপালাতেই রাত্রিযাপন করে কাকগুলো।

পূর্বাকাশে সূর্য উঁকি দিলে উড়ে চলে যায় খাদ্যের সন্ধানে।

কিন্তু গত মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) হঠাৎ করেই গাছ থেকে তিনটি কাক মাটিতে আছড়ে পড়ে। প্রায় তিনঘণ্টা ঝিম ধরে থাকার পর মরে যায় কাকগুলো। একই ভাবে ক’দিনে পালাক্রমে মরে আরও ১৪টি কাক। এভাবে আকস্মিকভাবে ১৭টি কাকের মৃত্যুর খবরে নড়েচড়ে বসে রাজশাহী প্রাণিসম্পদ বিভাগ।  

বৃহস্পতিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) স্থানটি পরিদর্শন করেন বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা। এ সময় তারা কাকের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে অসুস্থ ও মৃত কাকের মুখের লালা, রক্ত ও মল সংগ্রহ করে নিয়ে যান। এর সূত্র ধরে ঢাকা থেকে বেসরকারি সংস্থা আইসিডিডিআরবি’র একটি টিম যায় পরদিন। তারাও নমুনা সংগ্রহ করেন। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারিভাবে শুরু হয়েছে কাকগুলোর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পরপরই প্রাণিসম্পদ অধিদফতরকে জানানো হয়। শহর ও দূর-দূরান্ত থেকে কাকগুলো এখানে আসে। তাই পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, রামেক হাসপাতাল চত্বরে আকস্মিকভাবে কাকগুলো মারা গেলেও এই নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন, রাজশাহী বিভাগীয় পশু সম্পদ কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন।   

এক প্রশ্নের জবাবে পশু সম্পদ কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে তারা গত ৫ ফেব্রুয়ারি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন নমুনাও সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু প্রাথমিক আলামতে তারা অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছেন যে খাদ্যে মারাত্মক বিষক্রিয়ার কারণেই কাকগুলোর মৃত্যু হয়েছে।

এর পরও বিষয়টি নিশ্চিত করতে সংগ্রহ করা নমুনাগুলো তিনি জয়পুরহাটের আঞ্চলিক প্রাণিরোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন। সেখান থেকে পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেলে আরও সুনির্দিষ্টভাবে কাকগুলোর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বলা যাবে বলে জানান এই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

তিনি উল্লেখ করে বলেন, সর্বশেষ ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর পোল্ট্রি খামারে এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা (এআই) বা বার্ড ফ্লু দেখা দিয়েছিল। ওই সময় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপর রাজশাহীতে আর ভাইরাসজনিত এই রোগের অস্তিত্ব মেলেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৬
এসএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।