ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

র‌্যাব-প্রিজন ডাটাবেজ

সংরক্ষণ করবে অপরাধীদের ২০০ ধরনের তথ্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৬
সংরক্ষণ করবে অপরাধীদের ২০০ ধরনের তথ্য ছবি: রানা- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: অপরাধীর হাতের ১০ আঙ্গুলের বায়োমেট্রিক ছাপ এবং চোখের বায়োমেট্রি ইমেজসহ ২শ’ ধরনের তথ্য নিয়ে সংরক্ষণ করা হচ্ছে র‌্যাব-প্রিজন ইনমেট ডাটাবেজে।

র‌্যাবের অতিরিক্ত মহা-পরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল জিয়াউল আহসানের তত্ত্বাবধানে র‌্যাব ক্রিমিনাল ডাটাবেজের অনুকরণে এটি তৈরি করা হয়েছে।

ডাটা সংরক্ষণ অপারেটিংয়ে থাকবে র‌্যাব ও জেল কর্তৃপক্ষ। তবে এটি মনিটরিং করা হবে র‌্যাব সদর দফতর থেকে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন র‌্যাব সদর দফতরে রোববার (০৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র‌্যাব-প্রিজন ইনমেট ডাটাবেজটির উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহিদুল হক, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, কারা অধিদফতরের কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, গোয়েন্দা বাহিনী ডিজিএফআই এবং এনএসআই’র মহাপরিচালক প্রমুখ।

র‌্যাবের অপারেশন বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) কর্নেল জিয়াউল আহসান জানান, র‌্যাব ও কারা কর্তৃপক্ষ থেকে দক্ষ অপারেটর তৈরি করা, ৬৮টি কারাগারে ওয়ার্ক স্টেশন পৌঁছানো এবং ৬৮টি কারাগারে ফাইবার অপটিকস্ ল্যান নেটওয়ার্কে ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ নিয়ে র‌্যাব-প্রিজন ইনমেট ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে।

র‌্যাব-প্রিজন ইনমেট এনরোলমেন্ট ওয়ার্কস্টেশন- ল্যাপটপ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার, আইরিশ স্ক্যানার, ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা, সফটওয়্যার ও একজন দক্ষ অপারেটর নিয়ে গঠিত।

কর্নেল জিয়া জানান, প্রতিদিন প্রতিটি কারাগারে যে সংখ্যক বন্দির প্রবেশ হয়, দিন শেষে তার পরিসংখ্যান প্রতিটি কারাগারের নামে ডাটাবেজে সংগৃহীত হয়। প্রতিদিন যে সংখ্যক বন্দি প্রতি জেল থেকে জামিনে মুক্ত হন এবং জেল ট্রান্সফার হয়, তাও ডাটাবেজে সংগৃহীত হয়। প্রতিদিন যে সংখ্যক বন্দি প্রতি জেল থেকে কোর্ট ভিজিটে এবং সিভিল হাসপাতালে যান, তার ডাটাবেজ সংগৃহীত হয়।

যেকোনো অপরাধী জেলে এনরোলমেন্টের সময় ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে অন্যান্য জেলে অথবা একই জেলে কতোবার আটক হয়েছেন তার বিস্তারিতও জানা যাবে এ পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে।

অপরাধের ধরন অনুযায়ী এ ডাটাবেজ থেকে সার্চ করে প্রতিটি কারাগারে বন্দির সংখ্যা সহজে নিরূপণ করা যায়। বন্দির জেল ট্রান্সফার, জামিন, হাসপাতাল ভিজিট, বিশেষ কোনো তথ্য জেল থেকে মোবাইলে মেসেজ আকারে তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানো সম্ভব। এমনকি বন্দির জেল ট্রান্সফার বা বিশেষ গমনাগমন কর্তৃপক্ষ চাইলে ডাটাবেজ থেকে মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে বন্দির নিকট আত্মীয়কে জানাতে পারবে।

এ ডাটাবেজ থেকে র‌্যাবের ক্রিমিনাল ডাটাবেজে তথ্য আদান-প্রদান সম্ভব এবং অপরাধীর তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্র ডাটাবেজের সঙ্গে ম্যাচিং করানো যায়।

র‌্যাবের লিগ্যাল এইড অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের উপ-পরিচালক মেজর রুম্মান মাহমুদ জানান, কোনো অপরাধীকে গ্রেফতারের পর তার পরিচয় শনাক্ত ও অতীত অপরাধ রেকর্ড (পিসিআর) জানতেই অনেক সময় চলে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধীরা নিজেদের আড়াল করতে মিথ্যা তথ্যও দিয়ে থাকেন।

মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে বিলম্বে এটি অন্যতম একটি বড় কারণ। আবার দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীরা জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ফের অপরাধ করেন। বেশিরভাগ সময় তারা স্থান পরিবর্তন করায় তাদের চিহ্নিত করা দুস্কর হয়ে যায়। এ ধরনের অপরাধীদের শনাক্ত করতে এ ডিজিটাল পদ্ধতি কাজ অনেক সহজ করে দেবে।

মেজর রুম্মন মাহমুদ আরো জানান, সম্পূর্ণ ডিজিটাল ফরম্যাটে প্রস্তুত এ তথ্যভাণ্ডার থেকে কম্পিউটারের মাধ্যমে মুহূর্তে একজন অপরাধীর বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব। অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে এ তথ্যভাণ্ডার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এর বাইরে ছবি, অতীত অপরাধ সংঘটনের সংখ্যা, অপরাধের ধরন, দণ্ড সংক্রান্ত তথ্যও সংযুক্ত করা হয়েছে। এসব তথ্যের সঙ্গে অপরাধীর নাম, ঠিকানা, পেশাসহ ব্যক্তিগত বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৫
এনএইচএফ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।