ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মানবপাচারকারী চক্রের নারী সদস্য চিহ্নিত, মামলা করছে দুদক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৬
মানবপাচারকারী চক্রের নারী সদস্য চিহ্নিত, মামলা করছে দুদক

ঢাকা: সাগরপথে মানবপাচার করে তাদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের সঙ্গে জড়িত এক নারী সদস্যের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)। তার বিষয়ে অনুসন্ধানে অপরাধ প্রমাণীত হওয়ায় মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি দমন সংস্থাটি।

শিগগিরই মামলাটি দায়ের করবে দুদক।

অনুসন্ধান চালিয়ে দুদক জানতে পেরেছে, অপহৃত ব্যক্তিদের স্বজনদের পাঠানো টাকা এসেছে মিনু আরা বেগম নামের এক নারীর ব্যাংক হিসাবে।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, অর্থপাচারের অনুসন্ধান করতে গিয়ে এ নারীর একটি ব্যাংক হিসাবেই পাওয়া গেছে ৩১ লাখ টাকারও বেশি।

ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড কক্সবাজার শাখার ব্যাংক হিসাব নম্বর ২০৫০১১৬০২০৫৭৫৮৭০৯-এ ওই টাকা এসেছে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে।

সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের লোহাগড়া থানার আমিরাবাদের শফিক আহমেদ ওই ব্যাংক হিসাবে আড়াই লাখ টাকা পাঠান। তার ছেলে হাবিবুল্লাহকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর কথা বলে থাইল্যান্ডে আটকে রাখে পাচারকারীরা।

মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার পরও চাহিদামতো অতিরিক্ত টাকা না দেওয়ায় থাইল্যান্ডে খুন হন ওই তরুণ।

টেকনাফের নুরুল বশর ও রশীদের পরিবারের পক্ষ থেকে ২০১৪ সালের বিভিন্ন সময়ে ওই ব্যাংক হিসাবে আট লাখ ৯০ হাজার টাকা পাঠান আবদুল হক নামের তাদের এক স্বজন। টাকা দেওয়ার পরও ওই দু’জন এখনো মালয়েশিয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ঝিনাইদহের দুই রাজমিস্ত্রি গোলাম মোস্তফা ও মো. শাহাবুদ্দিনের পরিবার থেকে মিনু আরা বেগমের ব্যাংক হিসাবে মোট চার লাখ টাকা পাঠানো হলেও মুক্তি পাননি তারা। এভাবে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মিনু আরা বেগমের ব্যাংক হিসাবে মোট ৩১ লাখ ৩২ হাজার টাকা জমা হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, ২০১৫ সালে কক্সবাজার থানায় হাবিবুল্লাহর বাবা শফিক আহমেদের করা একটি মামলায় (মামলা নম্বর ৪৩/২/২০১৫) গ্রেফতার হন মিনু আরা বেগম। মামলায় হাবিবুল্লাহ অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নামে মিনু আরা বেগম ও তার স্বামী মাসুদুর রহমান তার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করেছেন। হাবিবুল্লাহকে নির্মম নির্যাতন করে থাইল্যান্ডে খুন করেছে অপহরণকারীরা। ওই মামলার তদন্তভার আসে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ওপর। সিআইডির তদন্তকালে মিনু আরা বেগমের ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ টাকার সন্ধান পাওয়া যায়। এ বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য দুদকের কাছে পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক। তারই পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে নামে দুদক।

অনুসন্ধান শেষে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ অর্থ পাচার আইনে মিনু আরা বেগমের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেন। দুদক কমিশন তা অনুমোদন করেছে। শিগগিরই এ বিষয়ে মামলা করবেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্পৃক্ত অপরাধ থেকে পাওয়া ওই অর্থের বিষয়ে জানা সত্ত্বেও মিনু আরা বেগম নিজ ব্যাংকে তা জমা রাখা ও তুলে ভোগ-দখল করে মানি লন্ডারিং আইনের ২(শ) ১৬ ধারা অনুযায়ী অপরাধ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৬
এডিএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।