ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অর্থনীতির অধিকাংশ সূচকই ঊর্ধ্বমুখী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৬
অর্থনীতির অধিকাংশ সূচকই ঊর্ধ্বমুখী ফাইল ফটো

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: চলতি অর্থবছরের (২০১৫-১৬) প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সামষ্টিক অর্থনীতির অধিকাংশ সূচকই ঊর্ধ্বমুখী। আর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রক্ষেপণেও প্রবৃদ্ধির আশাব্যঞ্জক চিত্র পাওয়া যাচ্ছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

  
 
রোববার (০৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাতীয় সংসদে ‘বাজেট ২০১৫-১৬: প্রথম প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ’ শীর্ষক প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
 
অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের পূর্ববর্তী (২০১৪-১৫) অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় ২৮ হাজার ২১৯ কোটি টাকা থেকে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩০ হাজার ৯২৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। মোট সরকারি ব্যয় ৩৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা থেকে ১ দশমিক ৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৭ হাজার ১২৪ কোটি টাকা হয়েছে।
 
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি আয় ৭ হাজার ৬৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৭৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।  
 
প্রতিবেদনে দেখা যায়,  ১ দশমিক ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে আমদানি ঋণপত্র নিষ্পত্তির হার থেকে। আর ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবাহ বেড়েছে ১২ দশমিক ৮৮ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ (৩০ সেপ্টেম্বর ১৫ পর্যন্ত) ২৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
 
চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে বলেন, ১২ মাসের গড় ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বর ২০১৪ এ ৭ দশমিক ২ শতাংশ থেকে সেপ্টেম্বর ২০১৫ সময়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশে নেমে এসেছে।  
 
অর্থমন্ত্রী বলেন, আর্ন্তজাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ায় ভর্তুকি ব্যয় কমেছে।   ফলে, অগ্রাধিকার খাতের সম্পদ সঞ্চালনের বাড়তি পরিসর তৈরি হচ্ছে, সহজতর হয়েছে ব্যয় ব্যবস্থাপনা কাজটি। একইসঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অনুকূল পরিবেশ অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে সচল রেখেছে।
 
তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ পরিস্থিতি ও কর্ম পরিবেশের উন্নয়নে রপ্তানিখাতে গতিশীলতা সৃষ্টির আভাস। অন্যদিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রক্ষেপণেও প্রবৃদ্ধির আশাব্যঞ্জক চিত্র পাওয়া যাচ্ছে।
 
অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫.০ শতাংশ। ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র থেকে জিডিপির ১.৭ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে জিডিপির ৩.৩ শতাংশ সংস্থানের পরিকল্পনা রয়েছে।
 
চলতি অর্থবছরের  প্রথম প্রান্তিক শেষে সরকার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়েছে ৭ হাজার ৪৮ কোটি টাকা, যা বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ১৮. ৩ শতাংশ। ব্যাংকে পর্যাপ্ত তারল্য থাকায় সরকারের এই ঋণ গ্রহণে ব্যক্তিখাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়নি বলে দাবি করেন অর্থমন্ত্রী।
 
ব্যাংক ঋণে সুদের হার নির্ধারণে সরকার কোনো নির্দেশনা দেয় না উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজারের চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে সুদের হার নির্ধারিত হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ঋণের স্প্রেড  হ্রাস পাওয়ার ধারা অব্যাহত আছে। এটি অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।
 
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, কৃষি খাতের সন্তোষজনক উৎপাদন, আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস, স্বাভাবিক সরবরাহ পরিস্থিতি এবং সরকারের দক্ষ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্তকতামূলক মুদ্রানীতি মূল্যস্ফীতি হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। সামনের দিনগুলোতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে ও বছর শেষে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই থাকবে।
 
গত অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে থেকে চলতি অর্থবছরের আগস্ট পর্যন্ত প্রবাস নিয়োগের ঋণাত্বক প্রবৃদ্ধির প্রভাবে প্রবাস আয় (রেমিট্যান্স) প্রবাহও কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৩ হাজার ৯৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪ হাজার ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
 
ধারাবাহিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ ধরে অনেক সম্ভাবনাকে সামনে রেখে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের সূচনা হয়েছে দাবি করে সংসদে মুহিত বলেন, বছরের শুরু থেকেই সচল আছে অর্থনীতির চাকা, সরকারের প্রাজ্ঞ ব্যবস্থাপনায় স্থিতিশীল রয়েছে সামষ্টিক অর্থনীতির সব খাত, আছে রাজনৈতিক স্থিতি।
 
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, সব মিলিয়ে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, সুষম, সমৃদ্ধ ও মর্যাদাপূর্ণ বাংলাদেশ গঠনের যে স্বপ্ন আমরা রচনা করেছি তা বাস্তবায়নের এখনই অনুকূল সময়।
 
বর্তমান সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের চলমান অগ্রগতি অচিরেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার দৃপ্ত লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়িত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।
 
** নিজ এলাকার নয়, দেশের মন্ত্রী হওয়ার আহ্বান
** ‘খালেদা পাকিস্তানি প্রভুদের শেখানো বুলি আওড়াচ্ছেন’
** ডেইলি স্টার বন্ধের দাবি সংসদে
** কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিলের প্রতিবেদন চূড়ান্ত

** মা ইলিশ সংরক্ষণের সময়সীমা ২২ দিন করা হচ্ছে
** রাজাকারদের নামসহ তালিকা করা হবে
** সুন্দরী কাঠ বাজারে পাওয়া গেলে ব্যবস্থা
** চালু হচ্ছে নিউইয়র্ক-বাংলাদেশ ফ্লাইট

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৬
এসএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।