ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চা দোকানি বাবুল হত্যা

পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করবে পরিবার

নুরুল আমিন ও শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৬
পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করবে পরিবার ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রাজধানীর শাহ আলী থানার গুদারাঘাট এলাকায় দগ্ধ হয়ে নিহত চা দোকানি বাবুল মাতুব্বরের মৃত্যুর ঘটনায় ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করবে তার পরিবার।

গুদারাঘাট এলাকায় নিহত বাবুলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এমনটা জানা যায়।



নিহত বাবুলের স্ত্রী লাকী বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি টাকা চাই না। স্বামী হত্যার বিচার চাই। আমার স্বামীকে যে পুলিশরা পুড়িয়ে হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করবো। ’

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার পরপর শাহ আলী থানায় ৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছিলো। কিন্তু ওই মামলায় অভিযুক্ত কোনো পুলিশ সদস্যের নাম ছিলো না। এ ঘটনার মূলে পুলিশ জড়িত। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি দায়ীদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে আরও একটি মামলা করবো। ’

ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে লাকী বলে, ‘মাত্র দেড়শ’ টাকার জন্য আমার স্বামীকে পুড়িয়ে মেরেছে তারা (পুলিশ)। চাঁদার টাকার জন্য দুই দফা দোকানে এসে তাকে (বাবুল) মারধর করে পুলিশ। তৃতীয়বার এসে পুলিশ আমার স্বামীর কাছে চাঁদা চায়, এক পর্যায়ে স্টোভের আগুনে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তার শরীরে আগুনে ধরে যায়। ’

‘ওইদিন বাসায় বাজার করার জন্য টাকা ছিলো না। আমার ওষুধেরও দরকার ছিলো। কিন্তু মাত্র দেড়শ’ টাকার জন্য ওরা আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছে। ’

ওই এলাকায় বসবাসরত সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক আরিফুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, পুলিশ মানুষের জানমাল রক্ষায় কাজ করবে, কিন্তু তা না করে তাদের হামলায় মানুষ মারা যাচ্ছে।

‘পুলিশের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তম‍ূলক শাস্তির দাবি’ জানান তিনি।

ছেলে হারা বাবুলের মা রওশন আরা বেগম বলেন, ‘চান্দার লাইগ্যা আমার পোলারে মাইরা ফালাইলো পুলিশ। আমি বুকের ধনেরে কত কষ্ট দিয়া ম‍ারছে। ওই ডাকাইত পুলিশ গো বিচার চাই। ’   

শাহ আলী থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, বাবুল হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। বিষয়টি তদন্ত করেও দেখা হচ্ছে।

এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, গুদারাঘাট এলাকায় তিনটি মাদকের স্পট রয়েছে। ওই স্পটের নেতৃত্ব দেন পারুল নামের এক মাদক বিক্রেতা।

শুধু পারুলই নন, ওই এলাকার এসব স্পট থেকে নিয়মিত মাসহারাও নেয় পুলিশ। অন্যদিকে নিজেরাও হকার ও রাস্তায় দোকানিদের কাছ থেকে চাঁদা তোলে তারা।

আব্দুর রশিদ বলেন, ওই এলাকার পারুল নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর আগে ৩ ফেব্রুয়ারি শাহ আলীর গুদারাঘাট এলাকায় পুলিশের ‘হামলা’য় স্টোভের আগুনে দগ্ধ হন বাবুল মাতুব্বর (৪৫)।

পরের দিন দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিতে মারা যান তিনি।

এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় শাহ আলী থানার ওসিসহ ৫ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০২১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৬
এনএ/এসজেএ/এমএ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।