নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাতখুনের দু’টি মামলায় ৩৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেছেন আদালত। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন ধার্য করা হয়েছে।
সোমবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে অভিযোগ গঠন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত।
সাতখুনের দু’টি মামলায় প্রধান আসামি নূর হোসেন এবং র্যাবের চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন ও এম এম রানাসহ গ্রেফতারকৃত ২৩ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাদেরকে দোষী না নির্দোষ বলে জানতে চাইলে আসামিরা নিজেদেরকে নির্দোষ বলে দাবি করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, আদালত দু’টি মামলার চার্জ গঠন করেছেন এবং আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, সোমবার সকালে কঠোর নিরাপত্তায় ২৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সাতখুনের ঘটনায় নিহত কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল পৃথকভাবে মামলা দু’টি করেন। হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক বছর পর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের আদালতে ৩৫ জনকে অভিযুক্ত অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মামনুর রশিদ মন্ডল।
আসামিদের মধ্যে ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নূর হোসেন ছাড়া বাকিরা হলেন, সামরিক বাহিনী থেকে বরখাস্ত তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, এম এম রানা ও আরিফ হোসেন, র্যাব সদস্য এসআই পূর্ণেন্দু বালা, এএসআই বজলুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ, হাবিলদার এমদাদুল হক ও নাসির উদ্দিন, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন ও বাবুল হাসান, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক হীরা মিয়া, বেলাল হোসেন, ল্যান্স কর্পোরাল রুহুল আমিন, সিপাহী আবু তৈয়ব, নুরুজ্জামান ও আসাদুজ্জামান নূর এবং নূর হোসেনের সহযোগী মোর্তুজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী ও আবুল বাশার।
পলাতক রয়েছেন আরো ১২ জন। তারা হলেন র্যাবের সার্জেন্ট এনামুল কবীর, এএসআই কামাল হোসেন, কর্পোরাল মোখলেছুর রহমান, সৈনিক আব্দুল আলিম, মহিউদ্দিন মুন্সী, আল আমিন শরীফ, তাজুল ইসলাম ও কনস্টেবল হাবিবুর রহমান পলাতক।
হত্যার দায় স্বীকার করে র্যাবের ১৭ জনসহ ২২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এছাড়া ঘটনার সাক্ষী হিসেবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন র্যাব সদস্যসহ আরও ১৭ জন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৬
এএসআর