রাজশাহী: কাকের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে মরা কাকের নমুনা এবার ঢাকার কেন্দ্রীয় রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে জয়পুরহাটে পরীক্ষার করে নয়টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
সোমবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তা ঢাকায় পাঠান কাকের মৃত্যুর কারণ নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি।
এর আগে সোমবার বিকেলে তদন্ত কমিটির সদস্যরা আবারো কাক মারা যাওয়ার স্থান পরিদর্শন করেন। সংগ্রহ করেন নতুন নমুনাও।
তবে কাক মারা যাওয়ার পর পরীক্ষার জন্য জয়পুরহাট রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারে পাঠানো হয়। সেখানে নয়টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ভালো ভাবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরে তা ঢাকার কেন্দ্রীয় রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারে পাঠানো হয়।
নমুনা পরীক্ষার পর সাতদিনের মধ্যে সেখান থেকে প্রতিবেদন পাঠানোর কথা রয়েছে।
রাজশাহী জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নিজাম উদ্দীন বাংলানিউজকে জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় হঠাৎ করে একের পর এক কাক মারা যাওয়ার ঘটনায় অহেতুক মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি হচ্ছে। এনিয়ে এখনই আতঙ্কের কিছু নেই।
বিষয়টি মনিটরিংয়ের জন্য থানা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা.ইয়ামিন আলীকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। প্রতিদিন তারা ওই এলাকার খোঁজ-খবর রাখছেন। মৃত কাক পেলে সেগুলো সরিয়ে নিচ্ছেন। তবে সোমবার কোনো মৃত কাক পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, কাকের মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার জয়পুরহাট রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. দৌলত আনার নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ দল আবারো স্থান পরিদর্শন করেছেন। তারা নতুন করে নমুনাও সংগ্রহ করেছেন। তবে এবার জয়পুরহাটে নয় নমুনা সংগ্রহের পর তা পাঠানো হয়েছে ঢাকায়। এসময় রামেক হাসপাতাল উপ-পরিচালকের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন তারা।
এদিকে, পর্যায়ক্রমে শতাধিক কাক মারা যাওয়ার ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। মৃত কাকের সংখ্যা বাড়তে থাকায় হাসপাতালে আগতদের মনে নানা ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ভাইরাসজনিত কারণে এসব কাক মারা যাচ্ছে সন্দেহ করা হলেও প্রাণি সম্পদ বিভাগ এখনই তা মানতে নারাজ।
রাজশাহী জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা নিজাম উদদীন বলেন, এনিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কাকগুলো খাদ্য বিষক্রিয়ায় মারা যাচ্ছে। এছাড়া কয়েকটি কাকের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে সেগুলোর পেটে বেশ কিছু পলেথিন জমে আছে। এটিও মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
তার পরও এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি কাকের মল ও রক্তসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে জয়পুরহাটের আঞ্চলিক রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারেও পাঠানো হয়। জয়পুরহাট ও ঢাকার রিপোর্ট পেলে তারা আরো নিশ্চিত করে বিষয়টি বলতে পারবেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত, রামেক হাসপাতালের মূল ফটকের ভেতরে বেশ কিছু বড় বড় গাছ রয়েছে। এসব গাছ পাখিদের অভয় আশ্রম হিসেবেই পরিচিত। হাসপাতাল চত্বরের ভেতরে হওয়ায় এখানে কারো কোন উৎপাত নেই। এ কারণে অসংখ্য পাখি এখানে অবস্থান করে। এসব পাখির বেশিরভাগই কাক।
মূলত প্রতিদিন সন্ধ্যার পর কাকগুলো শহর ও দূর-দূরান্ত থেকে এসে গাছের ডালে রাতযাপন করে। ভোরে আবারোও চলে যায় বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু গত এক সপ্তাহ থেকে হঠাৎ করে গাছ থেকে কাক মরে মরে মাটিতে পড়তে থাকে।
** রামেকে কাকের রহস্যজনক মৃত্যু, নড়েচড়ে বসেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ
বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৬
এসএস/বিএস